Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আল-জাজিরার প্রতিবেদন অপসারণ করতে বিটিআরসিকে হাইকোর্টের নির্দেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৪৬

ঢাকা: বাংলাদেশকে নিয়ে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার করা ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার ম্যান’ তথ্যচিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য সব মাধ্যম থেকে অপসারণের জন্য বিটিআরসিকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটনি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব।

তিনি বলেন, ‘আদালত অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার ম্যান’ প্রতিবেদনটি রিমুভ করতে ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সট্রাগ্রাম, টুইটারসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অবিলম্বে বিটিআরসিকে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

কেন রাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্গান এখনও এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারল না, সে জন্য আদালত উষ্মা প্রকাশ করেছেন। আদালত বলেছেন ‘প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে এভাবে মাফিয়া স্টেট হিসেবে উল্লেখ করা হলো-তখন রাষ্ট্রের অন্যান্য অর্গানগুলো কী করলো?’

রেজা-ই রাকিব আরও বলেন, ‘বিটিআরসি কেবল দেশের ভেতরে যেকোনো কনটেন্ট বন্ধ করতে পারে। কিন্তু দেশের বাইরের বিষয় বন্ধ করতে পারে না। সরাতে পারে না। এ জন্য আদালত আদেশ দিলে বিটিআরসি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এগুলো স্থায়ীভাবে সরাতে পদক্ষেপ নিতে পারবে।’

জানতে চাইলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে আল-জাজিরায় প্রচারিত কনটেন্ট সরানোর বিষয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) টেলিফোন ও ইমেইলের মাধ্যমে ফেসবুক ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে। বিজ্ঞ হাইকোর্ট ওই কনটেন্টটি সরানোর বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসি কনটেন্ট সরানোর বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’

বিজ্ঞাপন

এদিন সকালে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করেন। এর আগে গত সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ছয় অ্যামিকাস কিউরি আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপনে করেন। ছয় জনের মধ্যে পাচঁ জন রিটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা হলেন— আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, কামাল উল আলম, ফিদা এম কামাল, প্রবীর নিয়োগী, শাহদীন মালিক।

তবে রিটের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এবং সংবিধান রিটকারীকে সে অধিকার দিয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছিলেন অ্যামিকাস কিউরি আবদুল মতিন খসরু।

বাংলাদেশে আল-জাজিরা সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী এনামুল কবির ইমন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত অভিমত প্রদানের জন্য ছয় জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় অ্যামিকাস কিউরিরা সোমবার তাদের অভিমত তুলে ধরেন।

আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রেজা ই রাকিব, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটনি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

গত ১ ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা বাংলাদেশ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রচার করে। তারপরই বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। এরপর আইনজীবী এনামুল কবির ইমন সংক্ষুব্ধ হয়ে রিট দায়ের করেন।

রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসির) চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছিল।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর