Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইয়াবা মামলার সাজা— বই পড়া, সিনেমা দেখা, গাছ লাগানো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:২১

ঢাকা: তিন বছর আগে ৩০ পিস ইয়াবা নিয়ে আটক হয়েছিলেন গেন্ডারিয়ার বসুবাজার লেনের বাসিন্দা মো. রাজিব হোসেন রাজু (৩৪)। এ ঘটনায় মামলাও হয়েছিল। তিন বছর তিন মাস পর সেই মামলার রায় এসেছে। তবে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডের মতো গতানুগতিক কোনো রায় আসেনি এই মামলায়। বিচারক সে সাজা দিয়েছেন, তাতে রাজুকে মূলত নৈতিকতা সংশোধনের জন্য কিছু কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত হতে বলেছেন।

আদালত বলেছেন, রাজুকে একবছরের জন্য প্রবেশন দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাকে মুক্তিযুদ্ধ ও নৈতিকতার ওপর চারটি বই পড়তে হবে, মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত একটি চলচ্চিত্র দেখতে হবে, পাশাপাশি পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে। এর সঙ্গে কিছু শর্তও দেওয়া হয়েছে তাকে। সেসব শর্ত ভঙ্গ করলে অবশ্য তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা আক্তার এ ব্যতিক্রমধর্মী দণ্ড দিয়ে রাজুর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছেন। আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাজু গেন্ডারিয়া থানার ১৮,২০ বসুবাজার লেনের বাসিন্দা মৃত গোলাম মাওলার সন্তান। ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর একই থানার এস কে দাস রোডের নাজির হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে ৩০ পিস ইয়াবাসহ তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরই অভিযোগপত্র দাখিল করেন গেন্ডারিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল আলম। আজ এই মামলার রায় ঘোষণা হলো।

রায়ে আদালত ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৯ ধারায় আসামিকে প্রচলিত সাজার পরিবর্তে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে একবছরের জন্য প্রবেশন মঞ্জুর করেন। এই সময়ের মধ্যেই তাকে মহান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই ‘একাত্তরের দিনগুলি’ ও ‘একাত্তরের চিঠি’ এবং নৈতিকতার ওপর আরও দুইটি বই পড়তে হবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমনি’ দেখারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দুইটি বনজ ও তিনটি ফলজ বৃক্ষরোপণও করতে বলেছেন তাকে।

বিজ্ঞাপন

একইসঙ্গে প্রবেশনের এই সময়ের জন্য বিধি অনুযায়ী কিছু শর্তও মানতে হবে রাজুকে। এই সময়ে মধ্যে তিনি একই ধরনের বা অন্য কোনো ধরনের অপরাধ করতে পারবেন না, মাদক সেবন করতে পারবেন না, ‘খারাপ সঙ্গী’র সঙ্গে মিশতে পারবেন না। আর আদালত বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ তলব করলে তাকে যথাসময়ে হাজিরা দিতে হবে।

রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, আসামি যদি এই শর্তগুলোর কোনোটি ভঙ্গ করেন কিংবা তার আচরণ সন্তোষজনক না হয়, তাহলে তার প্রবেশন বাতিল হবে। সেক্ষেত্রে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। তবে প্রবেশনের একবছর সময়ে তিনি সন্তোষজনক আচরণ করলে তার জন্য সুফল পাবেন। চাকরি বা অন্য কিছু করতে গেলে তিনি কোনোভাবে অযোগ্য বিবেচিত হবেন না।

সারাবাংলা/এআই/টিআর

ইয়াবার মামলা টপ নিউজ প্রবেশন ব্যতিক্রমী সাজা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর