Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আবারও সড়কে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৩২

বরিশাল: দ্বিতীয় দফায় সাড়ে ১৩ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে আবারও ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মেসে হামলার ঘটনায় করা মামলায় তাদের অভিযুক্তদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের আটটি পথে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে, কোথাও বাঁশ, বেঞ্চ বা কাঠের তক্তা ফেলে রাখা হয়েছে। সেখানে বাধা পেয়ে যানবাহন থেকে নেমে অনেকেই হেটে গন্তব্যের দিকে রওনা হয়েছেন। দফায় দফায় মহাসড়ক অবরুদ্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এই রাস্তায় নিয়মিত চলাচলকারীরা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। দেড় ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শনাক্তকৃত ব্যক্তিদের আসামি করে পুনরায় মামলা দায়েরের জন্য সাড়ে ১৩ ঘণ্টার সময়সীমা বেধে দিয়ে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। দেড় ঘন্টার অবরোধে ভোগান্তিতে পড়ে বরিশালসহ, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা। রাত দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে আবুল বাশার রনি (২৫) ও মো. ফিরোজ (২৪) নামে দুই বাস শ্রমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, রূপাতলী হাউজিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের কয়েকটি মেসে হামলা চালানোর ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুহসিন উদ্দিন বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক দল কাজ শুরু করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালায়। সেখানে পার্কিং করে রাখা প্রায় অর্ধশতাধিক বাসে তল্লাশি চালানো হয়। রাত দেড়টার দিকে আবুল বাশার রনি ও মো. ফিরোজকে একটি বাসের ভেতর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আবুল বাশার রনি ও মো. ফিরোজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা ছাড়াও হামলার ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন বাস শ্রমিক জড়িত রয়েছেন। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রূপাতলী বিআরটিসি কাউন্টারের ম্যানেজার রফিক। এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ রফিককে গ্রেফতার করলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকার বিভিন্ন মেসে ঢুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করে বাস শ্রমিকরা। হামলায় ১১ জন শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়। আহতরা শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হামলার পর বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে কাঠ পুড়িয়ে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি বাস ভাঙচুর করে তাতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীরা।

এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অ.দা.) প্রফেসর ড. মুহসিন উদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এতে শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নীচ তলায় সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনায় জড়িত তিনজনের নাম প্রকাশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাখ্যান করেন তারা। শনাক্তকৃত ব্যক্তিদের আসামি করে পুনরায় মামলা করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় মহাসড়ক অবরোধসহ জোরালো কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সারাবাংলা/একে

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর