১৪ দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৫৩ জন
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:১৪
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশে জাতীয়ভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগের চতুর্দশ দিনে এক লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীতে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ২৯ হাজার সাত জন। এখন পর্যন্ত দেশে সর্বমোট ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৫৩ জন। ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরবর্তী সময়ে ৬৩০ জনের মাঝে হালকা জ্বর, গায়ে ব্যথা এমন লক্ষণ দেখা গেলেও এখন পর্যন্ত সবাই সুস্থ আছেন।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডা. মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘যেকোনো ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে মানুষের ভ্যাকসিন নেওয়ার স্থান লাল হতে পারে, সামান্য জ্বর আসতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার স্থানসহ শরীরে ব্যথা হতে পারে। এখন পর্যন্ত কারও মাঝেই এর চেয়ে গুরুতর কিছু দেখা যায়নি।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে যারা ভ্যাকসিন নিয়েছে তাদের মধ্যে ১৮ হাজার ৬৭০ জন পুরুষ ও ১০ হাজার ৩৩৭ জন নারী। রাজধানীতে এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে দুই লাখ ২২ হাজার ১৯ জন পুরুষ ও এক লাখ ১৩ হাজার ১৭১ জন নারী।
মহানগরী বাদে ঢাকা জেলায় এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছে ৪৪ হাজার ৮০৯ জন। এর মধ্যে ৩০ হাজার ৪০০ জন পুরুষ ও ১৪ হাজার ৪০৯ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় এই জেলায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন তিন হাজার ৮৭৯ জন। এর মধ্যে দুই হাজার ৯২৮ জন পুরুষ ও ৯৫১ জন নারী ভ্যাকসিন পেয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৬২ হাজার ২৩৯ জন। এর মধ্যে ৪০ হাজার ৫৪২ জন পুরুষ ও ২১ হাজার ৬৯৭ জন নারী। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত সাত লাখ ২১ হাজার ১৯ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। ভ্যাকসিন গ্রহণ করার পরে এই বিভাগে ১৭৬ জনের মাঝে ভ্যাকসিন নেওয়া পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে সবাই সুস্থ আছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ বিভাগে আট হাজার ১৮৮ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত এক লাখ ১১ হাজার ৫২৪ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ৭১ হাজার ৩৪৫ জন ও নারী ৪০ হাজার ১৭৯ জন। এই বিভাগে ৪১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও সবাই এখন সুস্থ আছেন।
চট্টগ্রাম বিভাগে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন পাঁচ লাখ ৬০ হাজার ১৫৩ জন। এর মধ্যে তিন লাখ ৭০ হাজার ৭২৭ জন পুরুষ ও এক লাখ ৮৯ হাজার ৪২৬ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে ভ্যাকসিন নিয়েছে ৩৭ হাজার ৭০৮ জন। এখন পর্যন্ত এই বিভাগে ১৪৩ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও সবাই এখন সুস্থ আছেন।
রাজশাহী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১৮ হাজার ৬৫১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৪৫৪ জন ও নারী সাত হাজার ১৯৭ জন। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন দুই লাখ ৮১ হাজার ৫৮৩ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৪ জন পুরুষ ও ৯৭ হাজার ৬৯৯ জন নারী। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ৬০ জনের শরীরে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তবে সবাই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১৫ হাজার ৭৬৫ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৭৬১ জন ও নারী ৬ হাজার ৪ জন। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন দুই লাখ ৩০ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৫০ হাজার ৯০৫ জন পুরুষ ও ৭৯ হাজার ২৪৫ জন নারী। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ৬৪ জনের শরীরে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তবে সবাই সুস্থ আছে এখন পর্যন্ত।
খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ হাজার ৮১৬ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৯৪০ জন পুরুষ, নারী আট হাজার ৮৭৬ জন। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন দুই লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৩ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৯২ হাজার ৭২৬ জন পুরুষ ও এক লাখ চার হাজার ৭২৭ জন নারী। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ৯১ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে সবাই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন।
বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় আট হাজার ৪৪৩ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ পাঁচ হাজার ৪২৪, নারী তিন হাজার ১৯। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক লাখ ২০ হাজার ৬১১ জন। এর মধ্যে ৮০ হাজার ৩৪৭ জন পুরুষ ও ৪০ হাজার ২৬৪ জন নারী। এই বিভাগে এ পর্যন্ত ২৫ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তবে সবাই সুস্থ আছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৮৬ জনকে। এর মধ্যে পুরুষ পাঁচ হাজার ৬১৫, নারী তিন হাজার ৪৭১ জন। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক লাখ ৬৮ হাজার ৫৬০ জন। এর মধ্যে এক লাখ সাত হাজার ৭৪৫ জন পুরুষ ও ৬০ হাজার ৮১৫ জন নারী। এই বিভাগে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে সবাই সুস্থ আছেন।
উল্লেখ্য, জনসাধারণ পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রথম দিন ৩১ হাজার ১৬০ জন ও দ্বিতীয় দিন ৪৬ হাজার ৫০৯ জন ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। তৃতীয় দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন এক লাখ এক হাজার ৮২ জন। চতুর্থ দিনে দেশে এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। পঞ্চম ও ষষ্ঠ দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করে যথাক্রমে দুই লাখ চার হাজার ৫৪০ জন ও এক লাখ ৯৪ হাজার ৩৭১ জন। সপ্তম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন এক লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৩ জন। অষ্টম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ২৬ হাজার ৬৭৮ জন। নবম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ২৬ হাজার ৯০২ জন। দশম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ২৬ হাজার ৭৫৫ জন। একাদশ দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ জন ও দ্বাদশ দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ৩৪ হাজার ৫৬৪ জন। ত্রয়োদশ দিনে দুই লাখ ২৫ হাজার ২৮০ জন ও চতুর্দশ দিনে এক লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে শুক্রবার ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম দিন ২১ জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও দ্বিতীয় দিন দেখা দেয় ৭১ জনের মধ্যে। তৃতীয় দিন ৯৪ জন এবং চতুর্থ দিন দেখা দিয়েছে ৭০ জনের শরীরে। পঞ্চম দিনে দেশে ৭৬ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ষষ্ঠ দিনে ৩১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সপ্তম দিনে ১৮ ও অষ্টম দিনে ২১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অষ্টম দিনে ২৯ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নবম দিনে ৩৫ ও দশম দিনে ২০ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একাদশ দিনে ২৭ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ দিনে যথাক্রমে ৪১ ও ৩১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। চতুর্দশ দিনে ২১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে সবাই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন।
সারাবাংলা/এসবি
অক্সফোর্ড করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন এমআইএস এমআইএস পরিচালক করোনাভাইরাস পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভ্যাকসিন স্বাস্থ্য অধিদফতর