শ্যামপুরের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার শিশুটি থাকত গাজীপুরে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:৫২
ঢাকা: রাজধানীর শ্যামপুরে পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুটির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। শিশুটির নাম নিহাদ ইসলাম (৩)। মা-বাবার সঙ্গে সে গাজীপুরে থাকত।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে নিহাদকে শনাক্ত করেন তার বাবা মো. হানিফ আলী।
তিনি জানান, তাদের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার বেংহাড়ী গ্রামে। মা নার্গিস বেগম। তাদের একমাত্র সন্তান নিহাদ। গাজীপুর জেলার গাছা উপজেলার বোর্ড বাজার শহিদ সিদ্দিক রোডের একটি বাড়িতে তারা থাকেন। তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই একটি সোয়েটার কারখানার শ্রমিক।
মো. হানিফ বলেন, টেলিভিশনের খবরে শ্যামপুর থেকে একটি শিশুর লাশ উদ্ধারের খবর পাই। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে আজ মর্গে এসে দেখি, ওই শিশুটিই আমাদের নিহাদ। তার কোমড়ে একটি সুতার সাথে চাবি ও ঘণ্টি বাঁধা থাকত। সেগুলো লাশের সঙ্গেই ছিল।
মো. হানিফ জানান, গাজীপুরের বোর্ড বাজারে সততা সোয়েটার কারখানায় কাজ করেন তার স্ত্রী নার্গিস। ছেলে নিহাদকে নিয়ে তিনি প্রতিদিন ওই কারখানায় যেতেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালেও তিনি কারখানায় নিয়ে যান নিহাদকে। এরপর তিনি যখন কাজ করছিলেন, কোনো এক ফাঁকে নিহাদ কারখানার গেটে দাঁড়িয়ে ছিল। কারখানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ওই জায়গা থেকে মাস্ক পরা এক ব্যক্তি শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে যায়।
নিহাদের বাবা বলেন, আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু কোথাও নিহাদকে খুঁজে পাইনি। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে গাজীপুর গাছা থানায় একটি অভিযোগ করেছিলাম।
শিশুটির মামা সাদ্দাম হোসেন বলেন, নিহাদের মা-বাবার সঙ্গে এলাকার কারও কোনো দ্বন্দ্ব নেই। নিহাদকে কী কারণে কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল, সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। কেউ ফোন দিয়ে মুক্তিপণও চায়নি। যে বা যারা আমাদের এই নিষ্পাপ বাচ্চাটিকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই।
শ্যামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহবুবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, শিশুটির ময়নাতদন্ত গতকালই (মঙ্গলবার) করা হয়েছে। তার মলদ্বারে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আজ (বুধবার) স্বজনরা মরদেহটি শনাক্ত করেছে। মরদেহটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
এসআই আরও জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে কাজ করছে পুলিশ।
শিশুটির ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) শিশুটির ময়নাতদন্ত করেছি। মরদেহটিতে পচন ধরেছিল। আঘাতের তেমন কোনো চিহ্ন বোঝা যায়নি। তবে রেক্টাল সফট থেকে নমুনা, ডিএনএ ও ভিসেরা সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেগুলোর প্রতিবেদন পেলে শিশুটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর