ভুয়া জামিননামা দাখিল: যুবলীগ নেতাসহ ৩০ জনকে গ্রেফতারের নির্দেশ
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:১২
ঢাকা: হাইকোর্টের ভুয়া জামিননামা তৈরি করায় বগুড়া সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া আগামী সাত দিনের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এ ছাড়া বিষয়টি তদন্ত করতে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম বলেন, ‘একজন আইনজীবী সকালে কোর্টে এসে খবর নেন এ মামলায় ৩০ জন আসামির জামিন হয়েছে কি না। তখন কোর্টের বেঞ্চ অফিসার বললেন, আমাদের কোর্ট থেকে এ ধরনের কোনো আগাম জামিন হয়নি। এমন কোনো অর্ডার আমরা পাশ করেনি।’
এ সময় বেঞ্চ অফিসার তার কাছে জানতে চান জামিনাদেশের কোনো কপি আছে কি না। তখন তিনি বলেন, ‘মোবাইলে ছবি আছে। সেটি নিয়ে বেঞ্চ অফিসার বিষয়টি কোর্টকে জানায়। কোর্ট বিষয়টি আমলে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনে তাদের গ্রেফতার করতে নির্দেশ দেন।’
এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের নাম উল্লেখ করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়েছেন আমিনুর ইসলামসহ ৩০ আসামি। কিন্তু ওই দিন এই কোর্ট থেকে এমন কোন জামিনাদেশ হয়নি। এমনকি সেখানে আইনজীবীদের যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেটির কোন মিল খুজে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। তার মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোট ভাই মশিউল আলম দীপন বাদী হয়ে আমিনুর ইসলামকে প্রধান করে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে।
এ মামলার প্রধান আসামি আমিনুর ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে ১৮ নম্বর কোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছি। তবে তিনি তার আইনজীবীর নাম বলতে পারেননি।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, যারা এভাবে ভূয়া জামিননামা তৈরি করেছেন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলে এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এতে জালিয়াত চক্রের জন্য সতর্ক বার্তা হবে বলেও তিনি জানান।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমআই