‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পণ্য পরিবহনেও নৌপথকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার’
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:২০
ঢাকা: দেশের অভ্যন্তরে কেবল নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নৌপথ ব্যবহারে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমাদের নদীগুলোতে নাব্য ফিরিয়ে এনে এই নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌপথকে আরও উন্নত এবং আরও সচল করে দিচ্ছি, যেন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পণ্য পরিবহন খুব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করতে পারি। এই বিষয়টিতে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৫৫তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একাডেমির চট্টগ্রাম ক্যাম্পাসে এই আয়োজনে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। আমাদের দেশ নদীমাতৃক। আমাদের রয়েছে বিশাল বিশাল নদী, আমাদের রয়েছে নৌবন্দর, সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এমনিক আমরা গভীর সমুদ্রবন্দরও নির্মাণ করছি। সব দিক থেকেই নৌচলাচল বা নৌপথ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। তার ওপর আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। আমাদের দুর্ভাগ্য যে জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে সমুদ্রসীমা আইন করলেও পঁচাত্তর পরবর্তী যারা ক্ষমতা এসেছিল, তারা এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তারা দেশটাকে চিনত না, জানতও না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে উদ্যোগ নিয়ে বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া আমাদের বঙ্গোপসাগর, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি চ্যানেল, গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। বিশ্বের অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য এখান থেকে চলে।
প্রতিযোগিতাময় বিশ্বের সঙ্গে চলতে হলে সর্বোচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সরকার প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেরিন একাডেমির ৫৫তম ব্যাচের ক্যাডেটদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আজ প্রশিক্ষণ পেয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবেন, তারা সবাই যখনই যে দেশে কাজ করবেন, নিজেদের দেশ হোক আর বিদেশে হোক, সেই দেশের আইন, নিয়মকানুন বা সমুদ্র আইন— সবকিছু মেনে চলতে হবে। শৃঙ্খলাবোধ ভেতরে থাকতে হবে। কর্মক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে, যেন দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ন থাকে।
লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে— এ কথা স্মরণে রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ক্যাডেটরা নতুন জীবনে পদার্পণ করছে। সেখানে দেশে-বিদেশে দেশের মান রক্ষা করে চলতে হবে। অন্য দেশে গেলে সেখানকার সভ্যতা, কৃষ্টি, সংস্কৃতির সঙ্গে আদান-প্রদান করতে হবে। নিজ দায়িত্ব সততা, দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে, যেন যাতে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়।
দেশে চলমান কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছি বলেই এবং দীর্ঘদিন সরকারে থাকার সুযোগ পেয়েছি বলেই প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ আমরা পেয়েছি। এই করোনাভাইরাসের সারাবিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে আমরা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। অনেক উন্নত দেশের আগে আমরা ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছি, ভ্যাকসিন প্রয়োগও চালু করে দিয়েছি। তবে ভ্যাকসিন নিলেও আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। মাস্ক ব্যবহার করা, হাত পরিষ্কার রাখা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন। আপনার সুরক্ষা অন্যকেও সুরক্ষিত রাখবে।
৫৫তম ব্যাচের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ক্যাডেটদের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন পদক তুলে দেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি প্রান্তে এসময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
৫৫তম ব্যাচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড মেরিন একাডেমি