Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদ্যুৎ সাবস্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ছে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপনডেন্ট
৬ মার্চ ২০২১ ০৮:১৯

ঢাকা: বাস্তবায়নে ধীরগতি বিরাজ করছে ‘কন্সট্রাকশন অব নিউ ১৩২/৩৩ কেভি এন্ড ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন্স আন্ডার ডিপিডিসি’ প্রকল্পে। গত ৪ বছরে অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৮৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এ অবস্থায় ব্যয় বাড়ছে ৫৩৭ কোটি টাকা। যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সেই সঙ্গে মেয়াদও বাড়ছে এক বছর।

এ সংক্রান্ত একটি সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এরইমধ্যে প্রক্রিয়াকরণ শেষ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিভিন্ন উপকেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে সঞ্চালন ও উপসঞ্চালন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে ডিপিডিসি এলাকা বিশেষ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটির ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো হবে। সিস্টেম ক্যাপাসিটি ১৩২ কেভি লেভেলে ১ হাজার ৮১৫ এমভিএ এবং ৩৩ কেভি লেভেলে ১ হাজার ৫১২ এমভিএ বৃদ্ধি করা হবে বলে আশা  করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ১ হাজার ৮৫০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এখন দ্বিতীয় সংশোধনের মাধ্যমে ফের ব্যয় বাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা  করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মেয়াদে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে বাস্তবায়নের আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় ২০১৯ সাল থেকে ২০২০ সালে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। এখন ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ডিপিডিসি এলাকায় ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য নতুন উপকেন্দ্র স্থাপনসহ বিদ্যমান ও নতুন বিভিন্ন উপকেন্দ্রের মাঝে সংযোগ স্থাপন করে সঞ্চালন ও উপসঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ

প্রকল্পটি সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, যান্ত্রিক সরঞ্জাম খাতে কাজের পরিধি ও ব্যয় বৃদ্ধি পিজিসিবি ও ডিপিডিসির যৌথ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক র্সোস-উপকেন্দ্র পরিবর্তন করায় প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট সংযোজনের সংস্থান রাখা পাশাপাশি অন্যান্য সোর্স উপকেন্দ্রের ইলেকট্রিক্যাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট সংযোজনের সংস্থান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণাধীন উপকেন্দ্রগুলো ফায়ার প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট সংযোজনের সংস্থান রাখা, প্রকৃত রুট সার্ভেও ভিত্তিতে ক্যাবলের পরিমাণ ও টাওয়ার সংক্যা বৃদ্ধি জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় ধানমন্ডি ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র ও বংশাল ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র রেনোভেশন কাজ এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করায় কাজের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও যান্ত্রিক সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধির জন্য যান্ত্রিক সরঞ্জাম খাতে ব্যয় বৃদ্ধি সার্বিকভাবে ১ হাজার ৪১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা হতে ১৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৫৪৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্থাপন কাজের পরিধি ব্যয় বৃদ্ধি:  যান্ত্রিক সরঞ্জাম খাতে কাজের পরিধি বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধি ও রুট পরিবর্তনের কারণে সঞ্চালন লাইন স্থাপনের জন্য ১১৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হতে ৩১ কোটি ২৪ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিবিধ মূলধন খাতে ব্যয় বৃদ্ধি: ২০১৯ সালে প্রণীত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সড়ক খনন ক্ষতিপূরণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিবিধ মূলধন খাতে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা হতে ১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ২১ কোটি ৩১ লাখ টাকা হয়েছে। ডেভেলপমেন্ট ক্যাপিটাল ফান্ড খাতে ব্যয় হ্রাস ঠিকাদারের পরিশোধিত বিল থেকে আয়কর ভ্যাট কর্তনের ফলে এই খাতে ব্যয় ৩১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা হতে ২৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা হ্রাস পেয়ে ৬ কোটি টাকা হয়েছে। ইন্টারেস্ট ডিউরিং কনন্সট্রাকশন (আইসিসি) খাতে ব্যয় হ্রাস: বাস্তব ব্যয়ের ভিত্তিতে এই খাতে ব্যয় ৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা হতে ৪৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা হ্রাস পেয়ে ৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা হয়েছে। কন্টিনঞ্জেন্সি খাতে ব্যয় কয়ে যাওয়া: প্রকল্পের আওতায মালামাল ক্রয় প্রায সম্পন্ন হওয়ায় বাস্তবতার ভিত্তিতে প্রাইস কন্টিনঞ্জেন্সি ও ফিজিক্যাল কন্টিঞ্জেন্সি খাত বাবদ ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রম হচ্ছে, নতুন ৭টি ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ, ৪টি ১৩২ কেভি বে-সম্প্রসারণ, নতুন ১৫টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ এবং ১৩২ কেভি জিআইএস, ৩৩ কেভি জিআইএস ও ১১ কেভি এআইএস সুইচগিয়ার স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সোর্স থেকে উপকেন্দ্র পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার ১৩২ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড ডাবল সার্কিট ক্যাবল স্থাপন, সোর্স থেকে উপকেন্দ্র পর্যন্ত ৩৮ দশমিক ২১ কিলোমিটার ৩৩ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড ডাবর সার্কিট ক্যাবল স্থাপন, সোর্স থেকে উপকেন্দ্র পর্যন্ত ২ দমমিক ৩ কিলোমিটার ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাই নির্মাণ এবং উপকেন্দ্র অটোমেশন সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খান বলেন, ‘এই প্রর্কপটি বাস্তবায়নের ফলে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিসিসি) আওতাধীন এলাকায় উপকেন্দ্র নির্মাণ ও বিভিন্ন উপকেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী সঞ্চালন ও উপসঞ্চালন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।’

সারাবাংলা/জেজে/একে

বিদ্যুৎ সাবস্টেশন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর