‘পাকিস্তানিদের অস্ত্র ছিল, বাঙালির ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ’
৭ মার্চ ২০২১ ২১:৩৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক সাতই মার্চের এক আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, ‘পাকিস্তানিদের অস্ত্র ছিল, গোলাবারুদ ছিল। আর বাঙালির ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, সবচেয়ে বড় মরণাস্ত্র। এই ভাষণের আগে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ছিল না, সমরাস্ত্র ছিল না। কিন্তু এই ভাষণের পর বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষই সৈনিক হয়ে যায়। বাঙালির প্রতিটি হাতই তখন হয়ে উঠে অস্ত্র।’
রোববার (০৭ মার্চ) বিকেল নগরীর আগ্রাবাদে ডবলমুরিং থানা আয়োজিত আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ অনুপম সেন।
ইউনূস বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণই আমাদের স্বাধীনতার রূপরেখা এঁকে দেয়। আমাদের অস্ত্র ছিল না। কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ওসি আব্দুল খালেক পুলিশের অস্ত্রাগার খুলে আমাদের দেন। এই অপরাধে হানাদার বাহিনী নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করে।’
এ সময় শহীদ ওসি আব্দুল খালেকের সম্মানে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী এলাকার যে কোনো একটি সড়কের নামকরণের দাবি জানিয়েছেন মোহাম্মদ ইউনূস।
অনুপম সেন বলেন, ‘১৯৪৮ সাল থেকেই আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। ৭ই মার্চের ভাষণে বাঙালি স্বাধীনতার মন্ত্র পায়। সেই মন্ত্রেই সশস্ত্র হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে আনে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু প্রতি পাড়া-মহল্লায় সংগ্রাম কমিটি গঠন করতে বলেন। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও সংগ্রাম কমিটি গঠন করি। ১৭ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিনই লালদিঘী মাঠে কমিটির কর্মসূচি পালন করা হত।’
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই এত উন্নয়ন হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে দেশ এক কোটি টন শস্য উৎপাদন করত, এখন চার কোটি টন শস্য উৎপাদন করে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশ নিজ অর্থায়নে পদ্মাসেতু করেছে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল করছে, ইকোনমিক জোন করছে, দুই হাজার ডলারের ওপরে মাথাপিছু আয় হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে- এগুলো সবই হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে। উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা চলছে তা অব্যাহত রাখতে পারলে ২০৫০ সালের মধ্যেই আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হব।’
স্বাগত বক্তব্যে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার জন্য যেভাবে বাংলাদেশ পুলিশ রাজারবাগ থেকে প্রথম প্রতিরোধ গড়েছিল, একইভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায়ও পুলিশ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশের যে অদম্য অগ্রযাত্রা, সে অগ্রযাত্রায় সহায়ক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ পাশে থাকবে।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পশ্চিম জোনের উপ কমিশনার মো. আব্দুল ওয়ারিশের সভাপতিত্বে ও ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক কিশোর মজুমদারের সঞ্চালনায় সভায় চসিকের কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, দৈনিক আমাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ, দৈনিক সমকালের ব্যুরো প্রধান সরওয়ার সুমন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে চসিকের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামে বাহাদুর ও জাফরুল হায়দার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস