আইপে হলো বাংলাদেশের পেপ্যাল: পলক
২১ মার্চ ২০১৮ ২২:২৮
।। শাহ্ ওমর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: দেশের প্রথম অনলাইনভিত্তিক ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘আইপে সিস্টেমস লিমিটেড’ যাত্রা শুরু করেছে। বুধবার (২১ মার্চ) রাজধানীর রেডিসন ওয়াটারগার্ডেন হোটেলে মোবাইল ওয়ালেটভিত্তিক এ সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
অনুষ্ঠানে ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও আইপে সিস্টেমস লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আহসানসহ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকারিয়া স্বপন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘ক্যাশলেস সমাজ গড়ার পথকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে এ ইন্টারনেট পেমেন্ট সেবা আইপে। ’ তিনি জানান, ক্যাশলেস সমাজ গড়া গেলে মানবাধিকার লঙ্ঘন,জঙ্গি অর্থায়নের মত অপরাধ অনেকাংশেই কমানো সম্ভব হবে।
তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে এসেছে। আইপে হচ্ছে বাংলাদেশে পেপ্যাল। ’
অনুষ্ঠানে আইপে প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকারিয়া স্বপন। তিনি বলেন, ‘কেনাকাটা বা যেকোনো কাজে অর্থ লেনদেনে আন্তর্জাতিক মহলে পেপালের মতো ব্যবস্থা চালু রয়েছে। দেশেও একই ধরনের সেবা চালুর অনুমোদন পেয়েছে আই-পে। আর্থিক খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বা ফিনটেক সেবায় আসতে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) অনুমোদন পেয়েছে। ফলে আই-পের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনে নগদ টাকার ব্যবহার প্রয়োজন হবে না।’
জাকারিয়া স্বপন আরো জানান, আই-পে সিস্টেমস লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রথম ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা। ইন্টারনেট-ভিত্তিক অর্থ লেনদেনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে দেশের সব ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা করেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আইপে অ্যাপটি এন্ড্রয়েড ও আইফোন অপারেটিং সিস্টেম সাপোর্ট করবে। এছাড়াও যেকোন অপারেটিং সিস্টেম থেকে ইন্টারনেটে প্রবেশ করে সেবাটি গ্রহণ করতে পারবেন গ্রাহক। ব্যক্তি ও ব্যবসার জন্য বাংলাদেশে একটি নিরাপদ পেমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তোলাই আইপের লক্ষ্য।
সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, আইপে হচ্ছে সম্পূর্ণ ক্যাশলেস একটি সেবা। গ্রাহককে ই-ওয়ালেটে ব্যালেন্স লোড করার জন্য অবশ্যই স্বীকৃত কোনো ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট অথবা ক্রেডিট/ডেবিড কার্ড থাকতে হবে। আবার ই-ওয়ালেট থেকে অর্থ ট্রান্সফার করার জন্যও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যবহার করতে হবে। ক্যাশ বা নগদ টাকার কোনো ব্যবহার এখানে নেই, যা বিকাশ কিংবা রকেটে আছে। এজেন্টের কাছ থেকে বিকাশে বা রকেটে ক্যাশ-আউট করা যায়।’
ক্যাশের ব্যবহার না থাকায় এবং সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এ ব্যবস্থায় পূর্ণ নিরাপত্তা থাকছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট থেকে এর নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা গেছে, একটি ই-ওয়ালেট চালুর জন্য গ্রাহককে অ্যাপস ডাউনলেডের পর চার ধাপে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। প্রথম ধাপে প্রফাইল, নাম ও মোবাইল নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। পরিচয়পত্রের কপি, ঠিকানা ও নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দিলেই অ্যাকাউন্টটি ভেরিফাই হবে। আর ভেরিফাই না হলে কোনো গ্রাহক লেনদেন করতে পারবেন না বলেও ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আইপে সেবা পেতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ই-ওয়ালেটে লোড (জমা) করে রাখতে হবে। সেখান থেকেই কেনাকাটা করা, পরিসেবার বিল পরিশোধ, ট্যাক্স, ট্রান্সপোর্ট ও টিউশন ফি পরিশোধ করা যাবে। একজন গ্রাহক একদিনে সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারবেন এ ব্যবস্থার মাধ্যমে। আর এক মাসে তার মোট ব্যয়ের সীমা থাকবে দুই লাখ টাকা। ব্যক্তিগত ই-ওয়ালেটে একজন সর্বাধিক চার লাখ টাকা জমা রাখতে পারবেন। তবে বাণিজ্যিক ই-ওয়ালেটে অর্থ জমা রাখার কোনো সীমা রাখা হয়নি।
সারাবাংলা/এসও/এসবি