আসামিদের সঙ্গে ফটোসেশন, ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ
১১ মার্চ ২০২১ ১০:২৬
বরিশাল: পটুয়াখালীর বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে একাধিক মামলার আসামিদের সেলফি ও ছবি তোলার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি।
পটুয়াখালীর নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহ গত মঙ্গলবার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুকিত হাসান খানকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। বুধবার ওই তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।’
উল্লেখ্য, দ্রুত বিচার আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার কিছু আসামি রোববার রাতে বাউফল থানা চত্বরে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ওসির সঙ্গে সেলফি ও ছবি তোলেন। পরে এগুলো তারা নিজেদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
ওসির সঙ্গে সেলফি ও ছবি তোলা ওইসব আসামিসহ ১৮-২০ জন গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নওমালা ইউনিয়নের বটকাজল গ্রামে স্থানীয় ব্যবসায়ী মিজান মৃধার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় মিজান মৃধা বাদী হয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী আদালতে দ্রুত বিচার আইনে একটি অভিযোগ করলে আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়ার জন্য বাউফল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারি থানায় ওই মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
বাদী মিজানুর রহমানের অভিযোগ, দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলার কোনো আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেননি বা পুলিশের কাছেও আত্মসমর্পণ করেননি। আসামিরা এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। সেই আসামিদের সঙ্গে থানার ওসির সেলফি ও ছবি তোলার ঘটনায় তিনি ভীত, শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এবং মামলা সুষ্ঠ তদন্ত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। অনেকেই আমার সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলেছেন। তাদের মধ্যে কে আসামি আর কে আসামি না, তা আমি চিনতে পারিনি।’
সারাবাংলা/এসএসএ