‘বাংলাদেশ আর ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরে বেড়াবার দেশ নয়’
১৮ মার্চ ২০২১ ১৮:৪৬
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরে বেড়াবার দেশ নয়। বাংলাদেশকে আর কেউ পিছনে টানতে পারবে না।’
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মেলা উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ তুলে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বাংলা একাডেমি বইমেলা প্রান্তে যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
দশটি ভিন্ন বিষয়ে অবদানের জন্য ১০ জনকে এবছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতিটি পুরস্কারের অর্থমূল্য ৩ লাখ টাকা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরে বেড়াবার দেশ না। অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি, আওয়ামী লীগ যখন থেকে সরকারে এসেছে, তখন থেকেই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর দেশের উন্নয়ন থমকে যাওয়ার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা ব্যক্তিগতভাবে সব হারিয়েছি কিন্তু বাংলাদেশ হারিয়েছিল তার সকল সম্ভাবনাকে। বাংলাদেশের মানুষ যখন আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তখন থেকেই আমরা দেশের উন্নয়নে জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করি। দ্বিতীয়বার যখন আমরা সরকারে আসি, তখন থেকে আমাদের এই প্রচেষ্টাই ছিল, বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে।’
‘যে দেশটি এত রক্ত দিয়ে, এত সংগ্রাম করে স্বাধীন হয়েছে; সেই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। সেই স্বাধীনতাকে সফল করতে হবে। বাংলাদেশ কারও মুখাপেক্ষী হবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আজকে আমরা এই সময়ে যখন আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি, যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি ঠিক সেই সময় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে উন্নীত হবার মর্যাদা পেয়েছি।’
মার্চ মাসে বই মেলা হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে অনুরোধ করব জাতির পিতার বই আমার দেখা নয়া চীন বা নিউ চায়না-১৯৫২ এটা সবাই একটু পড়বেন। পড়লে অনেক কিছু জানতে পারেবন। অনেক জানার সুযোগ আছে। শুধু তাই না, তিনি বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে কি ভাবেন, নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কি ভাবেন বা আমাদের ধর্মীয় অনুশাসন নিয়ে কি ভাবেন, সবকিছুই কিন্তু সেখানে চমৎকারভাবে, এত অল্প সময়ে সেটা লেখা আছে।’
‘তিনি ১৯৫২ সাল পর্যন্ত বন্দি ছিলেন। ৫১ সালে মুক্তি পেয়ে চায়না ভিজিটে যান। এরপর আবার ১৯৫৪ সালে তিনি গ্রেফতার হন। যখন ১৯৫৪ সালে তিনি বন্দি ছিলেন, তখন এই বইটি (স্মৃতিচারণ) লিখেছিলেন। একে একে আমরা সবগুলি করে দিচ্ছি। আরেকটি বাকি আছে এখন, সেটা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নিজের লেখা স্মৃতি কথা। সেটাও আমরা ভবিষ্যতে প্রকাশ করব। সেই প্রস্তুতিও আমরা নিচ্ছি। সিক্রেটস ডকুমেন্টসগুলি প্রকাশ করছি। কাজেই সিক্রেটস ডকুমেন্টসগুলিও যদি আপনারা পড়েন, বাংলাদেশের ইতিহাস, গবেষণার জন্য এটা একটা অমূল্য দলিল হিসাবে আসবে। একটা ইংল্যান্ড থেকেও একটা কোম্পানি এটা প্রকাশ করছে’—বলেন শেখ হাসিনা।
জাতির পিতার লেখা বিভিন্ন বইগুলোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই লেখাগুলির ভিতর থেকে কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যুদয় ইতিহাসটাও চমৎকার বেরিয়ে এসেছে। সিক্রেটস ডকুমেন্টস যেটা তার বিরুদ্ধে লেখা। সেখান থেকে কিন্তু অনেক সত্য অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আমি আশা করি, পূর্বে যারা বঙ্গবন্ধুকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন, তারা বোধহয় নিজেদেরকে শুধরে নিতে একটা সুযোগ পাবেন।’
সারাবাংলা/এনআর/এমআই