‘জাতির পিতার নির্দেশিত পথেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি’
২১ মার্চ ২০২১ ২১:৫২
ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশিত পথ বেয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছিলেন। তারই নির্দেশিত পথ বেয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কারণ তিনি যে পথ দেখিয়ে গেছেন, সেই পথ ধরে দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, আজকে তা প্রমাণিত সত্য।’
রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তার যে স্বপ্ন ছিল এই দেশের দারিদ্র্য পীড়িত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন। কারণ প্রকৃতপক্ষে এই দেশের সন্তান বা এই মাটির সন্তান কেউ কিন্তু এদেশের শাসন ক্ষমতায় কখনো আসতে পারেনি। আর বিশেষ করে ইংরেজরা যখন এই দেশে এসেছে, তখন থেকেই যেন আমাদের জনগণের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিল।’
এর কারণ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর যাই হোক, এদেশের মানুষ মোটামুটিভাবে ফসল ফলাত, খেয়ে-পরে; বেশ অল্পতেই তারা সুখী ছিল। তারা কিন্তু মাথা নত করতে জানত না। ইংরেজরা এদেশে এসে সব থেকে বেশি যেটা চেষ্টা করেছিল, এদেশের মানুষের আত্মগরিমাটা ভেঙে দেওয়া, আত্মসম্মান বোধটা ভেঙে দেওয়া এবং তাদেরকে একেবারে দরিদ্র্য করে দেওয়া এবং সেটাই তারা করে গিয়েছিল।’
‘সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বাধীন করে। তার স্বপ্ন ছিল, বাংলাদেশকে তিনি এমনভাবে গড়ে তুলবেন, যেন বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে চলতে পারে। ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে এদেশের মানুষ মুক্তি পেতে পারে। এদেশের মানুষ উন্নত সুন্দর জীবন পেতে পারে।’
১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত একটা কালো অধ্যায় আমাদের জীবনে আসে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর অবশ্য আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আরেকটা কালো মেঘ ছেড়ে গিয়েছিল বাংলার আকাশে। সেখান আমরা উত্তরণ ঘটিয়ে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে রেখে গিয়েছিলেন আমরা তারই নির্দেশিত পথ বেয়ে আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই উন্নয়নশীল দেশ হিসাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যেন-২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’
করোনাভাইরাস আবার নতুনভাবে দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে সকলকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে করোনাভাইরাসটাকে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু, আবারও নতুনভাবে দেখা দেওয়াতে আবার এর প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী দেখা গেছে। এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে আমাদের মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। পাশাপাশি আমাদেরও সাংগঠনিকভাবে কাজ করতে হবে।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, শিক্ষা সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। এছাড়া সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরাসহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গণভবন প্রান্তে সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।
সারাবাংলা/এমআই/এমআই