Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকায় কোভিড ইউনিটে আইসিউ বেড খালি ৫টি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ মার্চ ২০২১ ০০:৪১

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর চাপ বাড়ছে বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালগুলোতে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সবশেষ তথ্য বলছে, রাজধানীতে কোভিড-১৯ চিকিৎসা সেবা দেওয়া ১০টি সরকারি হাসপাতালের ১০৮টি আইসিইউর মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ১০৩ জন। অর্থাৎ আইসিইউ বেড ফাঁকা রয়েছে মাত্র পাঁচটি। তবে এর মধ্যে দুইটি বেড ফাঁকা আছে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে। এই হাসপাতালটি কেবল পুলিশ বাহিনীর জন্য বিশেষায়িত হওয়ায় কার্যত সাধারণ মানুষের জন্য আইসিইউ বেড খালি রয়েছে মাত্র তিনটি।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন ৩৪ জন, যা এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে এদিন তিন হাজার ৫৮৭ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন- বছরের সর্বোচ্চ ৩৪ মৃত্যু, সংক্রমণ আবারও সাড়ে ৩ হাজারের বেশি

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ বেড থাকলেও ফাঁকা রয়েছে মাত্র একটি। সরকারি কর্মচারী হাসপাতালেও ছয়টি আইসিইউর মাঝে মাত্র একটি বেড ফাঁকা আছে। আরও একটি বেড ফাঁকা রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ), যেখানে মোট ১৬টি আইসিইউ বেড রয়েছে কোভিড রোগীদের মধ্যে।

এর বাইরে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ১৬টি আইসিইউ বেড, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ বেড, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ বেড, মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ১৪টি আইসিইউ বেডের সবগুলোতেই রয়েছেন রোগী।

এছাড়া রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে দু’টি ফাঁকা রয়েছে। তবে এটি একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল, যা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে করোনাক্রান্ত রোগীদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো আইসিইউ সুবিধা নেই।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, অধিদফতরের তালিকাভুক্ত ১০টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ১৮৩টি আইসিইউ বেডের মাঝে ৪৬টি এখন পর্যন্ত ফাঁকা আছে। অর্থাৎ এসব বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১৩৭ জন রোগী আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রাম মহানগরীর তালিকাভুক্ত সরকারি চার হাসপাতালে আইসিইউ রয়েছে ২৫টি, তার মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ১৫ জন। বেসরকারি তিনটি হাসপাতালের ২০টি শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন ১০ জন।

অন্যদিকে সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ রয়েছে ৫৬৯টি। এর মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ৩৪২ জন। ফাঁকা রয়েছে ২২৭টি বেড।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারও চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করছে জানিয়ে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারিভাবেও চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে কিছু প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটকে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড করা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে আমাদের স্বাস্থ্যবিধিটা বেশি করে মানতে হবে, যেন হাসপাতালে কাউকে না আসতে হয়।’

করোনা সংক্রমণ এভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অনেকেই রিল্যাক্স হয়ে ঘুরছেন। এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে আমাদের জন্য ।কারণ, ভ্যাকসিন দিলেই সবার মাঝে অ্যান্টিবডি গড়ে উঠবে আর করোনা সংক্রমণ হবে না— এমনটি ভাবার কারণ নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে সংক্রমণ আরও বাড়বে।’ দেশে যুক্তরাজ্যের করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টটির উপস্থিতিও সংক্রমণ বাড়ার একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর