বিএনপি নয়, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদত দিচ্ছে সরকার: ফখরুল
৩০ মার্চ ২০২১ ১৯:৪৬
ঢাকা: বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদত দিচ্ছে বলে সরকার দলীয় নেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদত দেওয়ার জন্য সরকারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার একটা প্রচারণা চালাচ্ছে যে আমরা হেফাজতকে সমর্থন দিয়েছি, আমরা মৌলবাদকে সমর্থন দিয়েছি, আমরা সম্প্রদায়িক একটা সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করছি। পেছন দিক থেকে নাকি আমরা মদত দিচ্ছি, উসকানি দিচ্ছি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই— বিএনপি নয়, উসকানি তো দিয়েছে সরকার। প্রথম থেকেই উসকানি দিয়ে আজ এই অবস্থা তৈরি করেছে তারা।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে ঘিরে ‘হেফাজতকাণ্ডে’র পর বিএনপি দুই দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) বিকেলে গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করছিলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রথম যে মিছিল হেফাজতের ছিল বায়তুল মোকাররমে, তারা সাধারণভাবে প্রতিবাদ মিছিল করতে চেয়েছিল। সেই প্রতিবাদ মিছিলের ওপরে উত্তর দিক থেকে পুলিশ আক্রমণ করেছে। দক্ষিণ গেট দিয়ে যখন পালাতে গেছে, তখন আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছে। সেখানে বহু লোককে হতাহত করেছে। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের হাটাজারীতে। তারা সেখানে মিছিলে গুলি করেছে।’
‘ফলে স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর যখন সমগ্র জাতি পালন করছে, তখন এই অবৈধ সরকারের পুলিশ ও আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনীর গুলিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরেছে,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘ আমরা এই হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানিয়েছি। গতকাল সারাদেশে মহানগরগুলো প্রতিবাদ সমাবেশ ও আজ জেলা সদরগুলোতে প্রতিবাদ সমাবেশ-মিছিল হয়েছে। দুই দিনে সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশ করার চেষ্টা করেছে, বিভিন্ন জায়গায় সফল হয়েছে। বেশিরভাগ জায়গা পুলিশ ও আওয়ামী সশস্ত্র বাহিনী মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাধারণ মানুষের ওপর চড়াও হয়েছে, আক্রমণ করেছে। গত কয়েকদিনে আমাদের হিসাব অনুযায়ী ১৫ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই— আমাদের প্রতিবাদ ছিল স্বাধীনতা দিবসে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপরে তারা আক্রমণ করেছে। অথচ সারাক্ষণ সরকারি দলের নেতা, মন্ত্রী ও অনেক মিডিয়া এটাকে বিরোধী দল ও হেফাজতি তাণ্ডব বলছে। হেফাজতের সঙ্গে আমাদের এই কর্মসূচিগুলোর কোনো সংশ্রব নেই।’
তিনি বলেন, ‘হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। সরকার যেহেতু এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ আমরা করছি। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে, যেকোনো দল বা সংগঠন তাদের মতপ্রকাশের জন্য সমাবেশ করতে পারে, মিছিল করতে পারে। এখানে যে আঘাতটা এসেছে, আমরা তার প্রতিবাদ করছি— এটা আমাদের বুঝতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেসউইং সদস্য শায়রুল কবির খানসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর