থানা-ভূমি অফিসে হামলায় ৭ মামলা, নাম নেই হেফাজতের কারও
৩১ মার্চ ২০২১ ২০:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের থানা, ভূমি অফিসে হামলার ঘটনায় সাতটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় দেড় হাজার জনকে আসামি করা হলেও হেফাজতের কোনো নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। তদন্তে সম্পৃক্ততা পেলে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ছে পুলিশ।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় ছয়টি এবং পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে বুধবার (৩১ মার্চ) জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের প্রতিবাদে প্রায় সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ওইদিন দুপুরে বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে হেফাজতে ইসলামের মূল ঘাঁটি হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদরাসা থেকে মিছিল বের হয়।
মিছিলকারীরা নরেন্দ্র মোদি এবং সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে হাটহাজারী থানায় ভাংচুর করেন। স্থানীয় ভূমি অফিস এবং সরকারি ডাকবাংলোর ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান। হাটহাজারীর সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়ি জ্বালিয়ে দেন। ডাকবাংলোতে ভাংচুরের পাশাপাশি পরপর দুইদিন অগ্নিসংযোগ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে মাদরাসার তিন ছাত্রসহ চারজন নিহত হন।
এ ঘটনার পর ছাত্ররা মাদরাসার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে ইটের দেওয়াল তুলে দিয়ে তিনদিন ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখে। হতাহতের প্রতিবাদে রোববার (২৮ মার্চ) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে হেফাজতে ইসলাম। ধারাবাহিক কর্মসূচির পর রোববার রাতে হেফাজতের কর্মীরা সড়ক ছেড়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
অন্যদিকে পটিয়া উপজেলায় শুক্রবার দুপুরে আল জামেয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া নামে একটি কওমি মাদরাসার ছাত্ররা মিছিল বের করে। মিছিল থেকে তারা পটিয়া থানায় হামলা করে এবং একঘণ্টা ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
পুলিশ জানিয়েছে, সংঘাতময় পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে হাটহাজারী থানায় ছয়টি এবং পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হাটহাজারী থানার ছয়টি মামলার মধ্যে চারটি পুলিশের পক্ষ থেকে এবং ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছয় মামলায় অজ্ঞাতনামা পাঁচ শতাধিক মাদরাসা ছাত্রকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে পটিয়া থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটশ মাদরাসা ছাত্রকে আসামি করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রত্যেকটি ঘটনার জন্য আলাদা আলাদা মামলা হয়েছে। যে ঘটনায় আনুমানিক যতজন অংশ নিয়েছে, কোথাও আড়াইশ, কোথাও দেড়শ- এভাবে আসামি করা হয়েছে।’
মামলার এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে এসপি বলেন, ‘কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। কোনো সংগঠনের কারও নামও উল্লেখ করা হয়নি। শুধু মাদরাসা ছাত্র উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। তদন্তে সুনির্দিষ্টভাবে যাদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম