‘বিমসটেক দেশগুলোর বাণিজ্য ৩ থেকে ২১ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব
১ এপ্রিল ২০২১ ১৯:৩৭
ঢাকা: গত ২৪ বছরে বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) অনেক সফলতার পাশাপাশি এই অঞ্চলের প্রচুর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে এই ফোরামের সদস্য দেশগুলোর আন্তঃবাণিজ্য ৩ থেকে ২১ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব।
বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) এমন মন্তব্য করেন। শ্রীলঙ্কা এবারের বৈঠকের স্বাগতিক দেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এ বছর আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছি। বিমসটেকসহ দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচ জন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান আমাদের সঙ্গে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ ১০ দিনব্যাপী এই উদযাপনে অংশ নিয়েছে। আমাদের জাতির জনক ছিলেন সূদুরপ্রসারী চিন্তাশীল একজন নেতা। ১৯৭২ সালেই তিনি চিন্তা করেছিলেন যে এই অঞ্চলের দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করলে এই অঞ্চলের মানুষের প্রগতি ও উন্নতি সম্ভব। তখন থেকেই আঞ্চলিক সহযোগিতা বাংলাদেশের বিদেশ নীতির একটি অংশ। তারই অংশ হিসেবে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ বিমসটেকে যুক্ত হয়।’
এই মুহূর্তে বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংযুক্তি (কানেকটিভিটি) খাতে সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি। এ বিষয়ে আমাদের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর শীর্ষদের সঙ্গে (দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান) আলাপ করেছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাতটি শক্তিশালী রাষ্ট্র বিমসটেকের সদস্য, যেখানে বিশ্বের ২২ শতাংশ জনগোষ্ঠীর বসবাস এবং বৈশ্বিক জিডিপির পরিমাণ ৩ দশমিক ৬১ ট্রিলিয়ন ডলার। কাজেই বিমসটেক এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবংও সামাজিক উন্নতির জন্য খুবই সম্ভাবনাময় একটি প্ল্যাটফর্ম। অথচ এই অঞ্চলের আঞ্চলিক যোগাযোগ এখনও আশানুরূপ পর্যায়ে গড়ে ওঠেনি। বৈশ্বিক বাণিজ্যের তুলনায় এই অঞ্চলের দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য মাত্র ৭ শতাংশ। অথচ সবাই সহযোগিতা করলে এই হার ২১ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেদের মধ্যে যদি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও পরিবহন যোগাযোগ, কৃষি ও জ্বালানি, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তা, শিক্ষা ও পর্যটনের মতো খাতে সহযোগিতা বাড়াতে পারি, তাহলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত হতে বাধ্য। আর এই সম্ভাবনাকে বিমসটেকের মাধ্যমে সফল করা সম্ভব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘বিমসটেক ২৪টি বছর পার করেছে। দীর্ঘ এই সময়ে অনেক সাফল্য এসেছে। পাশাপাশি অনেক সম্ভাবনাও ছিল, যা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আমাদের মধ্যে মৌলিক কিছু আইনি উপকরণের বিষয়ে একমত হয়েছি, এই অঞ্চলের সুশাসন নিশ্চিতে আমাদের দ্বিগুণ কাজ করতে হবে। আশা করব, আসন্ন পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলনে আমরা আরও কিছু আইনি উপকরণে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাব।’
সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর