Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১ সপ্তাহের জন্য পালনীয় যে ৭ নির্দেশনা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ এপ্রিল ২০২১ ১৩:৪৮

ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বিস্তার রোধে এক সপ্তাহের জন্য ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ আরোপ করেছে সরকার। এর আওতায় মূলত নাগরিকদের চলাচল ও জনসমাগম এড়ানোর জন্যই বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সোমবার (৫ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর থাকবে।

রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে উপসচিব মো. শাফায়েত মাহবুব চৌধুরীর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

১১ দফার এই প্রজ্ঞাপনে মূলত ৭টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জনসাধারণের জন্য। দুইটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে। বাকি দুইটি নির্দেশনার একটিতে বাকি নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে জেলা ও মাঠ প্রশাসনকে। শেষ দফায় আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন- লকডাউন নয়, চলাচলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা সরকারের

৭ দফা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সড়ক-নৌ-রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। একইসঙ্গে বিদেশগামী বা বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তির ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিসেবা (ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস), দেশে স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

বিজ্ঞাপন

অফিস-আদালতের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজের জন্য সীমিত পরিসরে জনবলকে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প কারখানার শ্রমিকদেরও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। পোশাক খাতের কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে শিল্প কারখানা এলাকায় সুবিধাজনক স্থানে শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার) ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। অন্যদিকে, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান খোলা থাকবে। তবে শপিং মলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। এসব দোকান অনলাইনে পাইকারি ও খুচরা পণ্য বিক্রি করতে পারবে। সেক্ষেত্রে কর্মচারীদের সবসময় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে এবং ক্রেতারা সশরীরে দোকানে যেতে পারবেন না।

একইসঙ্গে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো খোলা রাখা গেলেও এসব স্থানে বসে খাবার গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো কেবল খাবার বিক্রি বা সরবরাহ করতে পারবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

এতে বলা হয়েছে, সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে। এই আদেশ অমান্য করা হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, আমরা আপাতত সাত দিনের জন্য এই নির্দেশনা কঠোরভাবে পালন করে দেখি। তারপর পরিস্থিতি দেখে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে দেশ ও জাতির কল্যাণে যেটা ভালো হয়, সেভাবে সিদ্ধান্ত নেব।

এর আগে, শনিবার (৩ এপ্রিল) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছিলেন, সোমবার থেকে সারাদেশে একসপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। পরে বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, দীর্ঘ বৈঠকের পর রাতে বৈঠকের সারসংক্ষেপ পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সেখান থেকে অনুমোদনের পরই এই প্রজ্ঞাপন জারি হলো।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

পালনীয় নির্দেশনা প্রজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর