Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তি, মার্কেট খুলে দিতে বিক্ষোভ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ এপ্রিল ২০২১ ১৯:০৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের নেওয়া বিধিনিষেধ আরোপের প্রথমদিনে চট্টগ্রামে অধিকাংশ দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সাধারণ মানুষের ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ ছিল না। বরং নগরীতে পাড়া-মহল্লা, অলিগলিতে মানুষের অবাধ বিচরণ, আড্ডা দিতেও দেখা গেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও কমতি ছিল না ব্যক্তিগত যানবাহনের। শিল্প কারখানা খোলা ছিল। তবে গণপরিবহনের অভাবে কারখানার কর্মীদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে মার্কেট-শপিংমল খুলে দেওয়ার দাবিতে প্রথমদিনেই চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ী, দোকানি ও কর্মচারীরা। এসব কর্মসূচিতে হাজারও মানুষের সমাগম ঘটে।

গণপরিবহন সংকটের কারণে সোমবার (৫ এপ্রিল) ভোর থেকে নগরীর নতুন ব্রিজ, কোতোয়ালী, নিউমার্কেট, আন্দরকিল্লা, টাইগারপাস, সদরঘাট, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, বারিকবিল্ডিং মোড়ে ছিল কারখানামুখী শ্রমিকদের জটলা। স্বাস্থ্যবিধি কিংবা সামাজিক দূরত্ব মানার চেয়েও তাদের মধ্যে কর্মস্থলে পৌঁছার তাড়া দেখা গেছে। অধিকাংশ কারখানা শ্রমিকদের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করার সরকারি নির্দেশনা মানেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ অবস্থায় নগরীতে রিকশা-অটোরিকশার ভাড়া দ্বিগুণ-তিনগুণ গুণতে হয়েছে কর্মজীবীদের। নগরীর কাজীর দেউড়িতে অপেক্ষমাণ সিইপিজেডের এক পোশাক কারখানার কর্মী শম্পা দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিএনজি টেক্সির ভাড়া চেয়েছে ৫০০ টাকা। রাস্তায় কোনো বাস নেই। তিনবার রিকশায় করে পথ ভেঙে ইপিজেডে গিয়েছি। দু’জন মিলে খরচ হয়েছে ৩০০ টাকা। লকডাউন আমাদের জন্য অভিশাপ।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, ‘লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ আছে। বিশেষ করে বাস বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের ভোগান্তিটা বেশি হচ্ছে।’

শ্রমিক নেতা রাহাত উল্লাহ জাহিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ লকডাউন ঘোষণার পর সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, শ্রমিকরা। তাদের আয়-উপাজর্নের কি হবে, কিভাবে তারা কারখানায় যাবে- এসব বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা সরকার দিতে পারেনি। এই যে গণপরিবহন বন্ধ করে দিল, শ্রমিকদের আয় বন্ধ হয়ে গেল তারা চলবে কিভাবে, তাদের পরিবার চলবে কিভাবে? সরকার যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে পারত, তাহলে লকডাউনেরই প্রয়োজন ছিল না। আগেরবারও লকডাউন নিয়ে মানুষের মধ্যে বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে তিক্ত অভিজ্ঞতা। এবারও একই ঘটনা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মুদি ও ওষুধের দোকানের পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে আরও কিছু দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ে খোলা দেখা গেছে একটি ইলেকট্রিক আইটেমের দোকান। জানতে চাইলে দোকানি বলেন, ‘পুলিশ এলে বন্ধ করে দেব।’

নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে সকাল থেকে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার কিছুই দেখা যায়নি। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জেলা প্রশাসনের একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে তাগিদ দিয়েছেন এবং মাস্ক বিতরণ করেছেন।

এদিকে সোমবার বিকেলে নগরীর নিউমার্কেট মোড় ও রিয়াজউদ্দিন বাজারের সামনে ‘লকডাউনের বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। হাজারেরও বেশি দোকানি ও কর্মচারিরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের তামাকুমণ্ডি লেন বণিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব জানিয়েছেন, প্রায় ১১০টি মার্কেটের দোকানের মালিক-কর্মচারিরা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সামনে রমজান। আমরা ঈদের কেনাকাটা করতে না পারলে কোটি কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়ব। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলা রাখতে চাই।’

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে ব্যবসায়ীরা মিছিল-সমাবেশ করেছেন। শান্তিপূর্ণভাবে উনারা কর্মসূচি পালন করেছেন।’

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় নগরীর জিইসি মোড়ে ইউনেস্কো শপিং ব্যবসায়ী সমিতি ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে লকডাউন প্রত্যাহার এবং মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

বিধিনিষেধ মার্কেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর