ঢাকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে দুদিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সাস্টেইনেবল ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট-২০২১’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) ।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সম্মেলনটির উদ্বোধন করা হয়। ৬ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে সম্মেলনটি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সম্মেলনটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম। এ পর্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন গ্লোবাল গ্রিন গ্রোথ ইনস্টিটিউট-এর ডিরেক্টর জেনারেল ফ্রাঙ্ক রিজবারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরক্ত সচিব মফিজ উদ্দীন আহমেদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মঈন।
উদ্বোধনী পর্বের সেশন চেয়ার হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার।
অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘সব সূচকেই বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন আগের চেয়ে ভালো করছে।’ এসময় তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার প্রথম ৩০ বছরে আমরা আশানুরূপ উন্নতি করতে পারিনি, তাই এখন আমাদের দ্বিগুণ গতিতে এগোতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘এ ধরণের সম্মেলন থেকে যেসব অ্যাকশন প্ল্যান আসবে তা নিয়ে আমাদের কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে।’ এসময় তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দ্রুতই ‘গ্রিন বন্ড’ বাজারে নিয়ে আসবে।’
ড. আতিউর রহমান বলেন, ’ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদী অর্থায়নের ব্যবস্থা করে, তাই পুঁজিবাজারই হলো দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের মূল ভরসা। মার্কেটের দক্ষতা নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে গুড ডিসক্লোজার-এর ব্যবস্থা করতে হবে। ভালো প্রতিষ্ঠানকে মার্কেটে আনতে প্রতিযোগিতামূলক প্রাইসিং নিশ্চিত করতে হবে।’ একইসঙ্গে টেকসই অর্থনীতির জন্য ফাইন্যান্সিয়াল রিপোটিং এবং কর্পোরেট গর্ভনেন্স-এর উপর গুরুত্বারোপ করেন। রেগুলেটরদের সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘দেশে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস ইনস্যুরেন্স এবং পেনশন ফান্ড দুর্বল, তাই এক্ষেত্রে আমাদের জোর দেওয়া উচিত।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ফ্রাঙ্ক রিজবারম্যান, বাংলাদেশে গ্রিন বন্ডের ইনেশিয়েটিভকে স্বাগত জানান। এসময় তিনি, এদেশে গ্রীন ফাইন্যান্সিং কে জোরদার করতে গ্রীণ প্রজেক্ট গুলোতে রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট (আর এন্ড ডি) ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের স্বল্পতা রয়েছে। কিন্তু, মানবসম্পদ রয়েছে। এ উভয় সম্পদের সমন্বয়ের মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে হবে।’
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুল মঈন তার আলোচনায়, বিভিন্ন সেক্টরে সাস্টেইনেবিলিটির প্রভাব ও গুরুত্ব তুলে ধরেন। এসময় তিনি বলেন, ‘রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনার পর বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সাস্টেইনেবিলিটির বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে।’
উদ্বোধনী পর্বের সেশন চেয়ার অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার, তার বক্তব্যে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এ ধরণের আলোচনার মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান বের হয়ে আসবে।’
দুদিনব্যাপী এই সম্মেলনে সারাবিশ্ব থেকে যোগ দিচ্ছেন টেকসই অর্থায়ণ ও বিনিয়োগ বিষয়ে পৃথিবীর ৩২ জনেরও বেশি খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ, গবেষক, পেশাজীবী, মার্কেট স্টেকহোল্ডার্স, নিয়ন্ত্রক সংস্থার শীর্ষ কর্তা ব্যক্তিসহ আরও অনেকে।