মামুনুল সমর্থকদের হামলায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু
৭ এপ্রিল ২০২১ ১২:০৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সমর্থকদের হামলায় আহত এক আওয়ামী লীগ নেতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতের নেতাকর্মীরা এ হামলার ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) রাত একটার দিকে নগরীর বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। তিনি চারদিন ধরে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মৃত মো. মুহিবুল্লাহ (৪৬) রাঙ্গুনিয়ার কোদালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি।
গত শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক অবরুদ্ধ হন। এ ঘটনা জানাজানির পর মামুনুলের সমর্থনে বের হওয়া মিছিল থেকে রাঙ্গুনিয়ার কোদালা ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া এলাকায় মুহিবুল্লাহসহ তিনজনের ওপর হামলা হয়। বাকি দু’জন হলেন- কোদালা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবু তাহের সারাবাংলাকে জানান, কোদালা আজিজিয়া মাদরাসার সামনে প্রথমে হেফাজতের নেতারা মাদরাসার ছাত্রদের নিয়ে জড়ো হন। যুদ্ধারপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সাবেক ক্যাডার হিসেবে পরিচিত বিএনপি নেতা ইউনুস মণি মাদরাসার অদূরে দক্ষিণপাড়া এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী নিয়ে জড়ো হন। হেফাজত এবং বিএনপি-জামায়াতের ৭০-৮০ জন মিলে মিছিল বের হয়।
আবু তাহের বলেন, ‘মিছিল দক্ষিণপাড়ায় কাঁঠালতলা সড়কে আসার পর ইউনুছ মণিরা গুজব ছড়িয়ে সকল মুসলমানকে মিছিলে আসার আহ্বান জানায়। তারা গুজব ছড়ায়- ঢাকায় মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করা হয়েছে, ইসলামপন্থীদের ধরে ধরে নির্যাতন করা হচ্ছে- এসব কথা বলে সাধারণ লোকজনকে উত্তেজিত করে তোলে। সারাদেশে মুসলমানরা মিছিল করছে, সবাই মিছিলে আসুন- এ ধরনের কথাবার্তাও তারা বলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন প্রায় ৪০০ জনের মিছিল এগিয়ে যাবার সময় দক্ষিণপাড়ার মুখে মহিবুল্লাহ, জব্বার এবং লিটনকে পেয়ে হামলা করে। জব্বার ও লিটন কোনোমতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মুহিবুল্লাহকে এলোপাতাড়ি নৃশংসভাবে কুপিয়ে আহত করে। তাকে প্রথমে চন্দ্রঘোনা হাসপাতালে, এরপর নগরীতে নিয়ে যাওয়া হয়।’
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কি বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। হামলাকারীদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি আহত জব্বার বাদি হয়ে, আরেকটি পুলিশের এসআই খোরশেদ আলম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। উভয় মামলায় ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম সারাবাংলাকে বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এবং গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা সতর্ক আছি। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।
সারাবাংলা/আরডি/এএম