‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নিরসনে জিরো টলারেন্সের পথে হেঁটেছি’
১২ এপ্রিল ২০২১ ১৬:৫৬
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গত ১২ বছরে আমাদের তিন বাহিনীর আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছি। সামরিক বাহিনীতে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ও প্রযুক্তির সংযোজন করেছি। সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ নিরসনে ‘শূন্য সহনশীলতার নীতি’ অর্থাৎ জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছি।’
সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আয়োজিত অনুশীলন ‘শান্তির অগ্রসেনা’ শীর্ষক অবলোকন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুশীলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। গত ৪ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত এই অনুশীলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং ভারতের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরভানে।
বাংলাদেশ ও ভারতের সেনা সদস্যদের পাশাপাশি ভুটান ও শ্রীলঙ্কার সেনা সদস্যরাও এই অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, তুরস্ক, সৌদি আরব, কুয়েত ও সিঙ্গাপুর থেকে সেনাবাহিনীর পর্যবেক্ষকরা অংশ নিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেকোনো দেশের জাতীয় মর্যাদা এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যথাযথভাবে প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী অপরিহার্য। তেমনি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সক্ষমতা যাচাই, নিয়মিত অনুলীলনের কোনো বিকল্প নেই। জাতির পিতা স্বাধীন বাংলাদেশে একটি সুশৃংখল ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। যা আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক।’
জাতির পিতা স্বল্পোতম সময়ে যুদ্ধবিধস্ত দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে রূপান্তরিত করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন এবং বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সহযোগিতার কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বশান্তি সুসংহত করার প্রয়াসে দেশ-বিদেশের শান্তিরক্ষীদের আধুনিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অব অপারেশন ট্রেইনিং প্রতিষ্ঠা করি। কারণ বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বিদেশে শান্তিরক্ষা মিশনে যাচ্ছে। তাই যাবার পূর্বে তাদের অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। সেটা মনে করে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলাম, বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠন করে তখন ফোর্সেস গোল-২০৩০ শীর্ষক দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে যাওয়ার কথাও তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, গত ১২ বছরে আমাদের তিন বাহিনীর আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এখন পযন্ত ১ হাজার ৮০০ নারী শান্তিরক্ষীসহ ১ লাখ ৭৫ হাজারের অধিক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী পাঁচটি মহাদেশের ৪০টি দেশের ৫৪টি মিশনে অংশগ্রহণ করছে। বর্তমানে ৭ হাজারের অধিক বাংলাদেশি সেনা ও পুলিশ সদস্য ১০টি মিশনে শান্তিরক্ষার উদ্দেশে মোতায়েন আছে।
আমাদের শান্তিরক্ষীগণ যে মিশনেই যাচ্ছেন, সেখানে জাতিসংঘের পতাকাকে সমুন্নত ও উড্ডীন রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করেছেন এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তারা অনেক সামাজিক কাজও করেছেন। এ কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সম্প্রতিকালে ভারত সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গান্ধী শান্তিপুরস্কারে ভূষিত করেছেন। এসব পুরস্কার বাংলাদেশের জনগণের পাশাপাশি বিশ্বমানবতার শান্তি ও সমৃদ্ধিতে জাতির পিতার আজীবন সংগ্রামের স্বীকৃতি বহন করে।’ এজন্য ভারত সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদও জানান।
সারাবাংলা/এনআর/এমআই