শোক ও শ্রদ্ধায় প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য
১৭ এপ্রিল ২০২১ ২২:১৮
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রয়াত স্বামী ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়েছে। উইন্ডসর ক্যাসেলে রাজকীয় এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় শনিবার (১৭ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেল তিনটায় (বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়)। এর আগে গত ৯ এপ্রিল প্রিন্স ৯৯ বছর বয়েসে মারা যান। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এ শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে মাত্র ৩০ জন অংশ নেন। প্রিন্স ফিলিপের, অর্থাৎ রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরাই কেবল শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। খবর বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ানের।
মৃত্যুর আগে প্রিন্স ফিলিপের ইচ্ছা ছিল তার শেষকৃত্য যেন রাজকীয় কায়দায় জাঁকজমকপূর্ণ না হয়। উইন্ডসর ক্যাসলের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান তার ইচ্ছা অনুযায়ী আড়ম্বরহীন রাষ্ট্রীয় আয়োজনে সম্পন্ন হয়। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তারা উপস্থিত হতে পারেননি। এমনকি রাজপরিবারের অন্য কোনো সদস্য যাতে সুযোগ পান সে জন্য যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। তবে এদিন গোটা ব্রিটেনজুড়ে নানা অনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপকে শ্রদ্ধা জানান সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
আনুষ্ঠানিকতার শেষ পর্যায়ে সেইন্ট জর্জ চ্যাপেলের রাজকীয় ভল্টে সমাহিত করা হয় প্রিন্স ফিলিপের মরদেহ। প্রিন্স ফিলিপের আরেকটি ইচ্ছা অনুযায়ী তার প্রিয় ল্যান্ড রোভার গাড়িতে করে তার মরদেহ জর্জেস চ্যাপেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে গির্জায় একা বসে আছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের রাজকীয় কোনো অনুষ্ঠানে এমন দৃশ্য বিরল
গত কয়েকবছরের বেশিভাগ সময়ই প্রিন্স ফিলিপ নরফোকে রানি এলিজাবেথের স্ট্র্যান্ডিংহাম এস্টেটে থেকেছেন। তবে করোনা মহামারি শুরু হলে তিনি উইন্ডসর ক্যাসেলে চলে আসেন। সেখানেই এলিজাবেথ-ফিলিপ দম্পতির ৭৩তম বিবাহবার্ষিকী ও প্রিন্স ফিলিপের ৯৯তম জন্মদিন নিভৃতভাবেই পালন করা হয়।
প্রিন্স ফিলিপের জন্ম ১৯২১ সালের ১০ জন গ্রিসের করফু দ্বীপে। গ্রিক ও ড্যানিশ রাজপরিবারের সদস্য ছিলেন তিনি। ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যে শিক্ষাজীবন কাটানোর পর ১৯৩৯ সালে যোগ দেন ব্রিটিশ রয়্যাল নেভিতে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় ১৯৪৭ সালে রাজা ষষ্ঠ জর্জ এলিজাবেথের সঙ্গে ফিলিপের বিয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দেন। ওই সময় নিজের গ্রিক ও ড্যানিশ রাজপদবি তাগ করে ব্রিটিশ প্রজাতে পরিণত হন প্রিন্স ফিলিপ। ২০ নভেম্বর দ্বিতীয় এলিজাবেথের (তৎকালীন প্রিন্সেস এলিজাবেথ) সঙ্গে তার বিয়ে হয়। প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাদের সাত দশকের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটল।
রাজপরিবারের সীমিতসংখ্যক সদস্য অংশ নিয়েছিলেন শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে। তাই ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করে প্রিন্স ফিলিপের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান বরিস জনসন
১৯৫২ সালে দ্বিতীয় এলিজাবেথের ব্রিটিশ সিংহাসনে বসেন। ওই সময় ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি থেকে অব্যাহতি নেন ফিলিপ। ১৯৫৭ সালে ব্রিটিশ প্রিন্স ঘোষণা করা হয় তাকে। ব্রিটিশ রাজদম্পতি এলিজাবেথ-ফিলিপ চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তারা হলে— প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস, রয়্যাল প্রিন্সেস অ্যান, ডিউক অব নিউইয়র্ক প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও আর্ল অব ওয়েসেক্স প্রিন্স এডওয়ার্ড।