Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্রামজুড়ে আগুন আতঙ্ক, কেউ বলছে ‘জিনের কাজ’, কারো দাবি ‘কালাজাদু’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২১ ০৯:০৯

ঠাকুরগাঁও: বালিয়াডাঙ্গীতে আগুনে পুড়ে মরার আতঙ্কে দিন পার করছে একটি গ্রামের শতাধিক পরিবার। আগুনের ভয়ে দিনরাত পাহাড়া দিচ্ছেন তারা। এসব শুনে এলাকার চেয়ারম্যান বলছেন, এই আগুন জিনে দিচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান এলাকাঘুরে পরামর্শ দিয়েছেন ‘মিলাদ’ দিতে।

ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের সাবাজপুর গ্রামে অলৌকিকভাবে প্রতিদিন ৩-৪ বার আগুন লাগছে বিভিন্ন বাড়িতে। কখনো রান্নাঘরে, কখনো বা কাপড়ের ট্রাংকের ভেতর, কখনও ঘরের চালে। গত ২০ দিনে প্রায় শতাধিকবার আগুন লেগেছে ২০টি পরিবারের বাড়িঘরে। আর এই আগুন নেভানোর জন্য ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক পাম্প স্থাপন করেছেন গ্রামবাসী।

বিজ্ঞাপন

ওই গ্রামের নুর আলম, মোতালেব, মকসেদ আলীসহ অনেকে জানান, গত বৃহস্পতিবার তিনবার আগুন লেগেছিল ওই গ্রামে। ভোরবেলা ও সকালে ঢাকনা দিয়ে রাখা প্লাস্টিকের ড্রামের ভিতর দুবার, দুপুরে গোয়াল ঘরে একবার।

গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে আরও জানা যায়, গেল মাসের ২৯ তারিখে শবে বরাতের রাতে প্রথম আগুনের সূত্রপাত ঘটে গ্রামটিতে। ওইদিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও পরের দিন ৩০ মার্চ আগুনে তিনটি পরিবারের ঘর-বাড়িসহ আসবাবপত্র পুড়ে গিয়ে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়।

ভুক্তভোগী মকসেদ আলী জানান, আমরা এখন বিশ্বাস করে নিয়েছি এটা অলৌকিক আগুন। ঢাকনা দেওয়া গামলার ভেতর আগুন লেগে পুড়ছে। কোরআন শরীফের ওপর আগুন লেগে ঢাকনা দেওয়া কাপড় পুড়ে গেছে। গত ২০ দিনের বেশি সময় ধরে আগুন লেগেই চলছে।

মোতালেব হোসেন জানান, গ্রাামে বেশ কয়েকজন তান্ত্রিক নিয়ে এসেছিলাম। তান্ত্রিকদের মতে পরিবারগুলোর ওপর ‘কালাজাদু’ করেছে কেউ। এগুলো দূর করতে হবে। তবে তাদের মধ্যে কেউ চেষ্টা করে আগুন বন্ধ করতে পারেনি। আগুন নেভানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি পাম্প বসানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আমেনা বেগম বলেন, এসব পরিবারের শিশুকিশোরদের স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ ভয়ে মাঠের কাজেও যেতে পারছে না। অনেকেই মাঠে ও বাইরে কাজ করতে গেলেও আগুন লাগার খবরে ছুটে আসতে হচ্ছে বাড়িতে। চরম আতঙ্কে দিন কাটছে পরিবারগুলোর।

উপজেলায় ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা অবশ্য দাবি করছেন, অসতর্কতার কারণে আগুন লাগছে। আমরা ওই পরিবারগুলোকে ১ মাস মনিটরিং করতে পরামর্শ দিয়েছি। সঠিকভাবে মনিটরিং করলে আগুনের সূত্রপাত খুজে পাবে। অলৌকিক কোনো ঘটনা আমরা বিশ্বাস করি না।

একে রহস্যজনক ঘটনা হিসেবে দেখছেন ইউপি চেয়ারম্যান দীলিপ চ্যাটার্জী। তিনি বলেন, ‘ওই গ্রামে প্রায় ২০-২৫ দিন ধরে এই ঘটনা ঘটছে। এটা জিনের আগুন হতে পারে। এ ব্যাপারে মানাগুনা করেও কোনো লাভ হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার যোবায়ের হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার, কম্বল ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে পরিবারগুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়ার জন্য।

ইউএনও আরও বলেন, পরিবারগুলো অলৌকিক আগুন দাবি করলেও বিষয়টি আমরা ভিন্নভাবে দেখছি। ধারণা করা হচ্ছে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করে পরিবারগুলোর মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, পরিবারগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/এএম

আগুন টপ নিউজ ঠাকুরগাঁও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভারত থেকে ফিরলেন ৯ বাংলাদেশি তরুণী
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৩

আজ জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৪

সবজি-মুরগির বাজার চড়া, অধরা ইলিশ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০

সম্পর্কিত খবর