Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘লকডাউনে’ চিকিৎসকের গাড়ি আটকে দেওয়া মামলা প্রত্যাহার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২১ ১৯:৫১

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৪-২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারিভাবে দেশব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পঞ্চম দিনে রাজধানীর এলিফেন্ট রোডে ডা. এনামুল কবির খানের গাড়ি আটকে মামলা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকার জরিমানাও করা হয়। তবে ২১ এপ্রিল মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে চিকিৎসক দম্পতিকে জরিমানার টাকাও দিতে হবে না বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. এনামুল কবির খান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ১৮ এপ্রিল পুলিশ যে মামলাটি করা হয় সেটি ২১ এপ্রিল প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ১৮ এপ্রিল ডা. এনামুল কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকালে ডা. কামরুন নাহার মুক্তা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাসা থেকে কর্মস্থল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে তিনি গাড়ি ছেড়ে দেন। এ সময় রাস্তায় যদি পুলিশ আটকায় তবে তাদের দেখানোর জন্য আমার স্ত্রী হাসপাতালে নেমে তার আইডি কার্ডটি চালকের কাছে দেয়। কিন্তু, ফেরার সময় বাটা সিগন্যাল এলাকায় গাড়ি আটকানো হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুনের নির্দেশে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট গাড়িটি থামান।’

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসককে হাসপাতালে নামিয়ে দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গাড়ি আটকানো হয়। এসময় আমি নিজেও পুলিশের সঙ্গে কথা বলি। পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলতে চাই। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট আর কথা বলতে রাজি হননি।’

বিজ্ঞাপন

সরকারি বিধি-নিষেধ থাকার পরেও নির্দেশনা না মানার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন ডা. এনামুল।

তবে ট্রাফিকের রমনা বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দায়িত্বরত চিকিৎসকদের গাড়ি না আটকানোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। তারপরেও যদি কোনো স্থানে এমন ঘটনা ঘটে থাকে তবে জরিমানা মওকুফের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ট্রাফিকের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার জয়দেব চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিধিনিষেধ চলাকালে জরুরি সেবার আওতাধীন গাড়ি ও চিকিৎসকদের গাড়ি যেন না আটকানো হয় সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। মামলা না দেওয়ার জন্যেও তারা মাঠে কর্মরত সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু এরপরেও মাঝে-মধ্যে ভুল হচ্ছে।’

যদি ভুলক্রমে কোনো চিকিৎসকের গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়ে থাকে তবে তাদের কার্যালয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান ওই উপ কমিশনার। জরিমানা মওকুফ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান। তবে অনেক সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশনা দিলে কিছু করার থাকে না বলেও জানান তিনি।

এর আগে, সরকারিভাবে বিধিনিষেধ শুরুর প্রথম দিন অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল একাধিক চিকিৎসক রাস্তায় হয়রানি হওয়ার অভিযোগ জানান। এদিন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে গাড়ি আটকানো হয় বলে জানান কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তারাও।

পরবর্তী সময়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট দুটি ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সড়কে পুলিশের কোনো সদস্য অপেশাদার আচরণ করলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ করা হয়।

প্রসঙ্গত, দেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ভাবে দেশব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে এই কঠোর বিধিনিষেধ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনে থাকা সব প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আইন-শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (স্থল, নদী ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভুত থাকবে।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

গাড়ি চিকিৎসক টপ নিউজ প্রত্যাহার মামলা লকডাউন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর