গোবিন্দগঞ্জের মিষ্টি আলু যাবে জাপানে
২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৮:১৭
গাইবান্ধা: একসময় মিষ্টি আলুকে বলা হত গরীবের ক্ষুধা নিবারণের ফসল। সময়ের ব্যবধানে সে প্রেক্ষাপট বদলে গেছে। সুদূর জাপানে মিষ্টি আলু রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে নতুন কোকি-১৪ জিও জাতের রফতানিযোগ্য মিষ্টি আলুর চাষ।
স্থানীয় জাতগুলোর চেয়ে নতুন এ জাতের মিষ্টি আলুর ফলন অনেক বেশি, আকারে বড় এবং খেতেও বেশ সুস্বাদু। রং লাল হওয়ায় দেখতেও বেশ আকর্ষণীয়। তাই বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় উৎপাদিত এই মিষ্টি আলু জাপানে রফতানি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাঙ্গালী নদীর তীরবর্তী রাখালবুরুজ, হরিরামপুর, তালুককানুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার চরের পলিযুক্ত বালিময় মাটিতে দীর্ঘদিন ধরে মিষ্টি আলুর চাষ করছেন কৃষকরা। এবার প্রথমবারের মত কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় প্রচলিত জাতের পাশাপাশি বিদেশে রফতানিযোগ্য নতুন কোকি-১৪ জিও জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। নতুন জাতের এ মিষ্টি আলু চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।
রাখাল বুরুজ ইউনিয়নের পাড় সোনাইডাঙ্গা গ্রামের বিপুল মিয়া বলেন, কোকি-১৪ জিও জাতের মিষ্টি আলু চাষে দেশীয় জাতের মতই একই সময় লাগে। এই আলু বিঘা প্রতি ৮০ থেকে ৮৫ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে, দামও ভাল।
একই এলাকার আব্দুল আজিজ বলেন, কোকি-১৪ জিও জাতের আলু চাষ থেকে শুরু করে বাজারজাত পর্যন্ত উপজেলা কৃষি বিভাগের তদারকি থাকায় কোনো হয়রানি ছাড়াই আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। তাছাড়া আমার জমির উৎপাদিত আলু জাপান যাচ্ছে ভাবতেই ভাল লাগছে।
নারিতো জাপান কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজার মেজবাউল ইসলাম বলেন, উৎপাদিত মিষ্টি আলু বিদেশে রফতানিযোগ্য করতে সঠিক পদ্ধতি ও কলাকৌশল বাস্তবায়নে উপজেলা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে চাষীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। রফতানিযোগ্য এই আলু কৃষকের জমি থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা মণ দরে কিনে নেওয়া হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকতা মো. খালেদুর রহমান বলেন, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন জাতের এ মিষ্টি আলুর আবাদ সম্প্রসারণে কৃষক পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের উপকরণ, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়ার পাশাপাশি মাঠ প্রদর্শনী এবং কৃষকদের সচেতন করতে মাঠ দিবস করা হচ্ছে। কৃষকরা মিষ্টি আলুর হেক্টর প্রতি ফলন পাচ্ছেন ২০ মেট্রিকটন। এ বছর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। সরকারিভাবে এবারই প্রথম কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৯ একর জমিতে কোকি-১৪ জিও মিষ্টি আলু চাষ এবং তা বিদেশে রফতানির উদ্যোগ প্রহণ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এসএসএ
গোবিন্দগঞ্জ জাপান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মিস্টি আলু রফতানি