পথশিশুদের পুনর্বাসনে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ
২৬ এপ্রিল ২০২১ ২০:০৮
ঢাকা: করোনাভাইরাস সংকটের এই সময়ে পথশিশুদের খাদ্য সংকটসহ অন্যান্য দুর্ভোগ বেড়েছে। সরকার তাদের জন্য নানা পদক্ষেপ নিলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। তাই পথশিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে।
আন্তর্জাতিক পথশিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় পরামর্শ সভায় সংসদীয় ককাসসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন। সোমবার (২৬ এপ্রিল) এই ভার্চুয়াল পরামর্শ সভার আয়োজন করে দাতা সংস্থা কেএনএইচ জার্মানি, স্ক্যান-বাংলাদেশ, পার্লামেন্টনিউজ বিডি ডটকম ও সচেতন সংস্থা।
স্ক্যান সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাস ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু। সাংবাদিক নিখিল ভদ্রের সঞ্চালনায় সভায় মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন স্ক্যান সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল।
সভায় শিশুদের রাজনৈতিক ও ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, সম্প্রতি শিশুদের ব্যবহার করে সারাদেশে নৈরাজ্য তৈরি করেছে হেফাজতে ইসলাম। এর আগেও শিশুদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। মাদক বহনসহ নানা অপকর্মে তাদের ব্যবহার করা হয়। শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এটা বন্ধ করতে হবে।
সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের সুরক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুবান্ধব আইন-নীতিমালা সংশোধন ও পরিমার্জন করেছেন। পথশিশুদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও পথশিশুদের সুরক্ষা উন্নয়নের জন্য সংসদীয় কমিটি ও ককাসের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোকে যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মূল প্রবন্ধে মনিরুজ্জামান মুকুল বলেন, টেকসই উন্নয়ন এসডিজি (লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনে করোনা পরিস্থিতিসহ সামগ্রিক বিবেচনায় পথশিশুদের সুরক্ষায় স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি গ্রহণ, আগামী অর্থবছরে পথশিশু পুনর্বাসনে বিশেষ অর্থ বরাদ্দ, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পরিচালিত পথশিশু সুরক্ষা কার্যক্রম সমন্বয় ও সহযোগিতা বৃদ্ধি, পথশিশুদের জন্য ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস রেসপন্স ইউনিট গঠন এবং সরকারি সংস্থা, বেসরকারি সংগঠন ও পথশিশুসহ সবাইকে নিয়ে একটি ক্রস সেক্টর বডি গঠন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি শিশুদের জন্য আলাদা অধিদফতরের কার্যক্রম দ্রুতই শুরু করা আহ্বান জানান তিনি।
কেএনএইচ জার্মানির ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর মাটিলদা টিনা বলেন, কেএনএইচ জার্মানি দীর্ঘদিন ধরে পথশিশুদের উন্নয়নে জন্য কাজ করছে। কিন্তু পথশিশুদের সমস্যা কারও একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে যৌথভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পরিচালিত পথশিশু বিষয়ক কার্যক্রমগুলো যথাযথ মনিটরিং আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সংসদীয় ককাসসহ সরকারি-বেসরকারি সংগঠনগুলোকে নিয়ে একটি কমিটি করার প্রস্তাব দেন তিনি।
আলোচনায় আরও অংশ নেন আপন ফাউন্ডেশন মো. আফতারুজ্জামান, ঢাকা আহ্সানিয়া মিশনের মাহাতাব হোসেন, এক রঙ্গা এক ঘুড়ি’র নীল সাধু, এলমা-চট্টগ্রারের জেসমিন সুলতানা পারু, জেজেএস-খুলনা’র প্রতিনিধি আব্দুর রহমান, সিআরএসএস’র এডওয়ার্ড রবিন বল্লভ, গুড নেইবার্স বাংলাদেশের রিমো রনি হালদার, এএসডির ফারহানা ইসলাম, লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল, পার্লামেন্টনিউজের সাকিলা পারভীন, সচেতন সংস্থার অ্যাডভোকেট প্রশান্ত মণ্ডল, এফপিএবি’র অরুন কুমার শীলসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
আন্তর্জাতিক পথশিশু দিবস কেএনএইচ জার্মানি পার্লামেন্টনিউজ বিডি ডটকম সচেতন সংস্থা স্ক্যান-বাংলাদেশ