শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আনতে হবে: নওফেল
২৭ এপ্রিল ২০২১ ০৯:০২
ঢাকা: যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আনতে হবে বলে মত দিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, ‘কোনো শিক্ষাব্যবস্থা যদি বলে তার পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই তাহলে সেটা হবে পৃথিবীর সবচে খারাপ শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার উন্নতির জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আনতে হবে।’
সারাবাংলা ডটনেট আয়োজিত সারাবাংলা ফোকাস অনুষ্ঠানে ‘দুর্যোগকালীন শিক্ষা নিয়ে নতুন পলিসির প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক গৌতম রায় এবং উন্নয়নকর্মী শিরিন আকতার। সঞ্চালনায় ছিলেন সারাবাংলার সিনিয়ন নিউজরুম এডিটর রাজনীন ফারজানা।
উপমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির সময়, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা পরিবার। এখন আমরা বুঝতে পারছি ক্লাসরুমই শ্রেণি কার্যক্রমের একমাত্র মাধ্যম নয়, শিক্ষকরা নয় জ্ঞানের একমাত্র উৎস। এখানে অনেক উৎস রয়েছে। বৈচিত্রপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘এইসব উৎসকে কাজে লাগিয়ে আমাদের একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে। জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তে আমাদেরকে একটা আউটকামভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় আসতে হবে। আমাদের একটা বড় জনগোষ্ঠি তরুণ, যুবা; এই সংখ্যার সুবিধাটা নিতে হলে আমাদেরকে সনাতন পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এজন্য আমরা পাঠ্যক্রম প্রতিনিয়ত নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে নওফেল বলেন, ‘কোনো শিক্ষাব্যবস্থা যদি বলে তার পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই তাহলে সেটা হবে পৃথিবীর সবচে খারাপ শিক্ষাব্যবস্থা। আমাদের এখানে অনিয়ন্ত্রিত কউমি শিক্ষাব্যবস্থায় যা পড়ানো হয় আরকি… সেটা কিন্তু অনেক আগের একটি সিস্টেম। কোনো বদল নেই। এমন হলে চলবে না। শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আনতে হবে।’
তথ্য প্রযুক্তি পড়ানো বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে তথ্য-প্রযুক্তি পড়ানো হচ্ছে, এটা অনেকে শুরতে মানতে পারেনি। তারা বলেছে দেশে বিদ্যুৎ নেই তথ্য প্রযুক্তি পড়ে কি হবে? কিন্তু এখন আমরা বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রফতানির দিকে যাচ্ছি। তাদের কথায় কান দিলে সেটি সম্ভব হতো না।’ এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী ও সময়োপযোগী নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন।
প্রতিমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘আমরা আশ্বস্ত করছি আমাদের পরিবর্তন সুন্দর দিকে যাচ্ছে। টিকা চলে আসার পর শিক্ষা কার্যক্রম আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। বিগত এক বছরে আমরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি সেটি কাটিয়ে উঠতে পারবো।’
মহমারির সময়ে শিক্ষা কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোন দেশেই ডিজিটাল সমতা সে অর্থে অর্জন করতে পারেনি। অসমতা থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। এটা কারিগরি ও প্রযুক্তিগত ভাবেও হয়। যেমন চট্টগ্রামে ইন্টারনেটের যেরকম গতি, ঢাকায় তারচেয়ে বেশি গতি পাওয়া যায়। এটা অর্থনৈতিক কারণ নয়, বরং প্রযুক্তির বাস্তবতা।’
তিনি বলেন, আমরা জনগণের কাছে পৌঁছুতে পেরেছি। যে বিদ্যালয়গুলো খুব সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে সেখানেও অনলাইনে শতভাগ পড়াশোনা করা অসম্ভব। তারপরও আমরা যতটুকু সম্ভব শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানুর চেষ্টা করছি। এসাইনসেন্ট, টিভি ক্লাশরুম, রেডিও, ইউটিউব সবখানে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে গেল বছরের মার্চ মাসের ১৮ তারিখ থেকে দেশের সব শ্রেণির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
সারাবাংলা/টিএস/এমও