Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চলছে মেট্রোরেলের কোচ ফিটিং, এরপর ট্রায়াল রান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ এপ্রিল ২০২১ ১৬:০৩

ঢাকা: ২১ এপ্রিল মেট্রোরেলের কোচের প্রথম চালান ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। চলছে মেট্রোরেলের কোচ ফিটিংয়ের কাজ। কোচগুলোকে একটির সঙ্গে আরেকটির জোড়া লাগানোয় ব্যস্ত নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কারিগরি কর্মকর্তারা। পাশাপাশি মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য স্থানীয় কর্মীদের দক্ষ করে তোলার কাজও এগিয়ে চলছে। আর এর সবই হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। দেশজুড়ে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও পুরো ডিপো এলাকা কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে। প্রথম চালানের ছয় কোচের ট্রেনটি ডিপোর অ্যাম্বেডেড ট্র্যাকে বসানো হয়েছে। ট্র্যাকে চালানোর উপযোগী করার পর ট্রায়াল রান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের ছয় কোচ বিশিষ্ট মেট্রোট্রেন সেট জেটি থেকে খালাসের পর দিয়াবাড়িতে ডিপোর অভ্যন্তরে নবনির্মিত ওয়ার্কশপ ইনসেপশন ট্র্যাকের ওপর স্থাপন করা হয়েছে। কোচগুলো এখন পরীক্ষা-নিরাক্ষা করা হচ্ছে।

ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক সারাবাংলাকে জানান, প্রথম চালানে যে কোচগুলো এসেছে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ফিটিংয়ের কাজ চলছে। কোচ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম থেকে আসা কর্মীরা এ কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘কোচগুলোর জোড়া লাগানোর কাজ শেষে হবে চূড়ান্ত ট্রায়াল। এসব প্রক্রিয়া শেষে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে মেট্রোট্রেনের কোচগুলো হস্তান্তর করা হবে।’

জানা গেছে, ২০১৭ সালের আগস্টে জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে মেট্রোরেলের জন্য ২৪ সেট ট্রেন তৈরির চুক্তি সই করে ডিএমটিসিএল। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি মেট্রোরেলের জন্য মোট ২৪ সেট ট্রেন সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। দুই পাশে দুটি ইঞ্জিন আর চারটি কোচের সমন্বয়ে ট্রেনের কোচগুলো তৈরি করা হচ্ছে। ২৪ সেটের মধ্যে পাঁচ সেট তৈরি হয়ে গেছে। যার প্রথম সেট ডিপোতে। আরও গত ২১ এপ্রিল জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে দ্বিতীয় সেট নিয়ে জাহাজ ছেড়েছে। যা আগামী ১৬ জুনের মধ্যে মোংলা বন্দর হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে। তৃতীয় এবং চতুর্থ মেট্রো ট্রেনসেট আগামী ১৩ আগস্ট বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা। পঞ্চম সেট বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর পর্যায়ক্রমে টেস্ট শুরু হবে। এরপরে ট্রায়াল রান। একইভাবে ২৪ ট্রেনসেটের ১৪৪টি কোচ চলাচলের জন্য ডিপোতে প্রস্তুত করা হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনগুলোয় ডিসি ১ হাজারর ৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল ট্রেনগুলোতে লম্বা ধরনের সিট রাখা হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা থাকবে। শীততাপনিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুইপাশে চারটি করে দরজা থাকবে। ১ হাজার ৭৩৮ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতার ট্রেনগুলোতে ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্টকার্ড টিকিটিং ব্যবস্থা। এই ২৪টি মেট্রোট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করতে পারবে।

জানা গেছে, লক্ষ্য অনুযায়ী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরেই উত্তরা থেকে আগারগাও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেল চলাচল শুরু করা হবে। সেজন্য দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। ডিএমটিসিএল’র ফেসবুক পেজে লিখেছে, কঠোর লকডাউন পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিকও সারাবাংলাকে বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ এগিয়ে চলছে। প্রকল্প কর্মীদের কর্মস্থলের কাছাকাছি থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া কর্মকর্তাদের কাজে যোগ দেওয়ার আগে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে।’

এদিকে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রকল্পের বাকি প্রায় ১১ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, জাইকার অর্থায়নে ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল নির্মিত হচ্ছে রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

ট্রায়াল রান মেট্রোট্রেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর