Sunday 06 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চবি ভর্তি পরীক্ষা: জেনে নিন মানবণ্টন ও আবেদনের যোগ্যতা

চবি করেসপন্ডেন্ট
২ মে ২০২১ ১০:১০ | আপডেট: ২ মে ২০২১ ১০:১৩
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের অনলাইনে ভর্তি আবেদন ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। আগামী ৭ মে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন ফরম পূরণ করা যাবে। আর ভর্তি পরীক্ষার ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ মে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এ বছরও ভর্তিতে মোট ১২০ নম্বরের মধ্যে মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে বহুনির্বচনি পদ্ধতির ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। আর বাকি ২০ নম্বর নির্ধারণ করা হবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে।

চবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অনিয়মিত (মানোন্নয়ন দেওয়া) শিক্ষার্থীদের আবেদন করার সুযোগ থাকছে না। যারা ২০১৮ সালে মাধ্যমিক ও ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, কেবল তারাই এবার ভর্তি পরীক্ষার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

বিজ্ঞাপন

ইউনিটভিত্তিক মানবণ্টন আবেদনের যোগ্যতা

গত বছরের তুলনায় এ বছর চবি ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইউনিটভিত্তিক আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা ও ভর্তি পরীক্ষার মানবণ্টন জেনে নেওয়া যাক।

ইউনিট

বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদ, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ এবং মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিজারিশ অনুষদের সমন্বয়ে ‘এ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা হবে। এই ইউনিটে আবেদনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ থাকতে হবে ৮.০০, প্রতিটিতে আলাদাভাবে জিপিএ ৪.০০ থাকতে হবে।

এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞানে ২৫ করে (ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যেকোনো তিনটি বিষয়ে উত্তর দিতে হবে) ৭৫ নম্বর থাকবে। ভর্তি পরীক্ষার বাকি ২৫ নম্বরের মধ্যে বাংলায় থাকবে ১০, ইংরেজিতে ১৫। ভর্তিচ্ছু আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলায় ন্যূনতম ৩ ও ইংরেজিতে ৪ নম্বর পেতে হবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে। পরীক্ষায় সাধারণ আসনে ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০, কোটার আসনে ৩৫ নম্বর।

বি ইউনিট

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ‘বি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য চতুর্থ বিষয়সহ দুই পরীক্ষায় মোট জিপিএ থাকতে হবে ৮.০০, প্রতিটিতে আলাদাভাবে নূন্যতম জিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে। তবে মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য চতুর্থ বিষয়সহ নূন্যতম মোট জিপিএ লাগবে ৭.৫০, প্রতিটিতে নূন্যতম জিপিএ ৩.০০ থাকতে হবে। ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম মোট জিপিএ ৮.০০ ও প্রতিটিতে নূন্যতম জিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে এই পরীক্ষায় অংশ নিতে।

‘বি১’ উপ-ইউনিটের অধীনে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ অধিভুক্ত চারুকলা ইনিস্টিউট, নাট্যকলা বিভাগ ও সংগীত বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের জন্যও একই যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা/ইংরেজি ঐচ্ছিকে ৩৫ (উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পড়েনি তারা বাংলার পরিবর্তে তাদের ঐচ্ছিক ইংরেজি বিষয়ে উত্তর দেবে), ইংরেজিতে ৩৫ ও সাধারণ জ্ঞানে ৩০ নম্বর থাকবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে। পরীক্ষায় সাধারণ আসনে ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০, কোটার আসনে ৩৫ নম্বর।

সি ইউনিট

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ‘সি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় যারা চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম মোট জিপিএ ৮.০০ এবং প্রতিটিতে আলাদাভাবে  জিপিএ ৩.৫০ পেয়েছে, তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। ভর্তিতে মোট ১২০ নম্বরের মধ্যে ১০০ থাকবে বহুনির্বচনি পরীক্ষায়, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে থাকবে বাকি ২০ নম্বর।

ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে ৩০, হিসাব বিজ্ঞানে ৩৫ এবং ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগে (কারবার সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা, ব্যাংকিং ও বিমা) ৩৫ নম্বর থাকবে। এখানেও প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কেটে নেওয়া হবে। পরীক্ষায় সাধারণ আসনে পাস নম্বর ন্যূনতম ৪০, কোটার আসনের জন্য ৩৫।

ডি ইউনিট

বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা— সব শাখার শিক্ষার্থীরাই এই ইউনিটে আবেদন করতে পারবেন। এই ইউনিটে আবেদন করতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম মোট জিপিএ ৭.৫০ এবং প্রতিটিতে আলাদাভাবে নূন্যতম জিপিএ-৩.৫০ পেতে হবে। তবে আইন বিভাগে ভর্তি হতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম মোট জিপিএ ৮.৫০ এবং প্রতিটিতে আলাদাভাবে নূন্যতম জিপিএ ৪.০০ পেতে হবে।

এই ইউনিটের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের বিভাগগুলোতে ভর্তি হতে চাইলে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম মোট জিপিএ ৮.০০ এবং প্রতিটিতে আলাদাভাবে নূন্যতম জিপিএ ৩.৫০ পেতে হবে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অবশ্যই গণিত বিষয় থাকতে হবে। আর মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অবশ্যই অর্থনীতি বিষয় থাকতে হবে।

এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা বা ঐচ্ছিক ইংরেজিতে (উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পড়েনি, তাদের জন্য বাংলার পরিবর্তে ঐচ্ছিক ইংরেজি) ৩০ নম্বর, ইংরেজিতে ৩০ নম্বর, বিশ্লেষণ দক্ষতায় ২০ নম্বর এবং সাধারণ জ্ঞান/গণিত/অর্থনীতিতে ২০ নম্বর থাকবে। পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে। পরীক্ষায় সাধারণ আসনে ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০, কোটার আসনে ৩৫।

ডি উপইউনিট

সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি-১’ উপইউনিটে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যেকোনো শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। তবে আবেদনকারী ভর্তিচ্ছুদের আলাদাভাবে আবেদন করতে হবে। এই ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এ বিভাগে ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে ৩০ নম্বরের ব্যবহারিক পরীক্ষা (সাধারণ ও কোটা আসনে) দিতে হবে। যেসব শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ ৬.০০ ও প্রতিটিতে আলাদাভাবে জিপিএ ২.৫০ পেয়েছে, তারা ভর্তি পরীক্ষায় যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

১২০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে ২০ নম্বর থাকবে এসএসসি-এইচএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে। বাকি ১০০ নম্বরের বহু নির্বচনি পরীক্ষা হবে। এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা বা ঐচ্ছিক ইংরেজিতে (উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পড়েনি, তাদের জন্য বাংলার পরিবর্তে ঐচ্ছিক ইংরেজি) থাকবে ৩৫ নম্বর, ইংরেজিতে ৩৫ নম্বর ও সাধারণ জ্ঞানে ৩৫ নম্বর। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কেটে নেওয়া হবে।

পরীক্ষায় সাধারণ আসনে ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৩৫, কোটার আসনে ৩০ (শুধু বিকেএসপি ও পেশাদার খেলোয়ারদের জন্য)। এক্ষেত্রে বাংলা বা ঐচ্ছিক ইংরেজিতে ৮, ইংরেজিতে ৭ ও সাধারণ জ্ঞানে ন্যূনতম ৮ পেতে হবে।

এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের ৩০ নম্বরের ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফিল্ড টেস্টে ১২ ও খেলাধুলা সনদে ২ পেতে হবে।

ভর্তি পরীক্ষার রুটিন

‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৮ ও ২৯ জুন, ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২২ ও ২৩ জুন, ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৩০ জুন এবং ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে ২৪ ও ২৫ জুন। এছাড়া ‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ উপইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে ১ জুলাই।

‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ উপইউনিটের ব্যবহারিক পরীক্ষার মধ্যে চারুকলা ইনস্টিটিউটের ব্যবহারি পরীক্ষা ৫ জুলাই, নাট্যকলার ব্যবহারি পরীক্ষা ৬ জুলাই, সংগীতের ব্যবহারিক পরীক্ষা ৭ জুলাই এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞানের ব্যবহারি পরীক্ষা হবে ৮ ও ৯ জুলাই।

প্রবেশপত্র ডাউনলোডের সময়সূচি

‘বি’ ইউনিট ৭ জুন, ‘ডি’ ইউনিট ৯ জুন, ‘এ’ ইউনিট ১৩ জুন, ‘সি’ ইউনিট ১৫ জুন, ‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ উপইউনিট ১৬ জুন থেকে উন্মুক্ত হবে প্রবেশপত্র ডাউলোডের জন্য। প্রতিটি ইউনিটের প্রবেশপত্র ভর্তি পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগ পর্যন্ত ডাউনলোড করা যাবে।

ভর্তিচ্ছুদের চবি’র ভর্তির ওয়েবসাইটের (https://admission.cu.ac.bd) মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করতে হবে।

সারাবাংলা/সিসি/টিআর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চবি টপ নিউজ ভর্তি পরীক্ষা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর