Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি কোম্পানিকে আর কত ভর্তুকি দিতে হবে— প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ মে ২০২১ ১৮:২২

ফাইল ছবি

ঢাকা: বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি (বিটিসিএল) ছাড়াও সরকারি ব্যাংক, বিমা, এয়ারলাইন্সগুলোকে কেন সরকারের ভর্তুকি দিতে হয়— সে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব কোম্পানিকে নিজেদের আয় করা অর্থ দিয়ে চলার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোম্পানিগুলো তো ব্যবসা করে। তাহলে নিজস্ব অর্থে উন্নয় করতে পারে না কেন? আর কত দিন তাদের ভর্তুকি দিতে হবে?

মঙ্গলবার (৪ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধনীর অনুমোদন দিতে গিয়ে তিনি সরকারি কোম্পানিগুলো নিয়ে কথা বলেন।

আরও পড়ুন- একনেকে ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। আজকের একনেক বৈঠকে ১১ হাজার ৯শ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিটিসিএল, ব্যাংক, মিমা, বিমান ও ইনস্যুরেন্সসহ সরকারি যেসব কোম্পানি রয়েছে, সেগুলোকে নিজেদের আয় করা অর্থ থেকে উন্নয়ন কাজ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কেননা তারা তো ব্যবসা করে, লাভও করে। তাহলে কেন সরকারি টাকায় তাদের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প নিতে হবে? প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছেন।

একনেক বৈঠকে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনের একটি প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। এই প্রকল্পটি আলোচনায় এলেই প্রধানমন্ত্রী সরকারি কোম্পানিগুলোর নিজেদের অর্থায়নে কাজ করার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একেনেকে প্রধানমন্ত্রী বিষয়গুলো জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যখন অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে আসেন, তখন প্রথমেই জানতে চান টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা কেমন। তাই বিনিয়োগ আকর্ষণ করতেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন। তবে এ-ও নির্দেশনা দিয়েছেন, এরপর থেকে সরকারি কোম্পানিগুলো যেন নিজস্ব অর্থেই প্রকল্প গ্রহণ করে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মোডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে রূপান্তরের সংশোধিত প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, অনেক দিন তো হলো, আর কত সময় লাগবে? দ্রুত কাজ শেষ করুন।

এছাড়া খাল খনন প্রকল্পের ক্ষেত্রে যেন ওপরে ওপরে মাটি কেটে অনিয়ম করতে না পারে, সেদিকে প্রধানমন্ত্রী সতর্ক থাকতে বলেছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, সেই সঙ্গে এসব খাল গভীর করে খননের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যেন শুষ্ক মৌসুমে এসব খালের পানি সেচ কাজে ব্যবহার করা যায়।

মন্ত্রী বলেন, উপজেলা পর্যায়ে যেসব খেলার মাঠ তৈরি করা হবে, সেগুলো যেন সবাই ব্যবহার করতে পারে, সেদিকে লক্ষ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, একক কোনো ক্লাব বা সংস্থার দখলে যেন এগুলো না যায়। তৈরি হতে যাওয়া শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামগুলোতে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও খেলাধুলার ব্যবস্থা রাখতে বলেছেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরকারের কাজ হলো মানুষের জীবন রক্ষা করা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ফাস্ট ট্র্যাক মন্ত্রণালয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিনের বিকল্প ব্যবস্থা করছে সরকার। ভারতের সঙ্গে চুক্তি ছিল। কিন্তু সেটি মোটামুটি ভেঙে গেছে বলা যায়। আইনিভাবে না ভাঙলেও তাদের দেশের অবস্থা তো খুবই খারাপ। তাদের নাগরিকদের বঞ্চিত করে তারা তো আমাদের ভ্যাকসিন দিতে পারে না। তাছাড়া তাদের ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতাও তো নির্দিষ্ট। সব মিলিয়ে বিষয়টি জটিল। তবে ভ্যাকসিন মিলছে না, অক্সিজেন মিলছে না— আমাদের দেশে এমনটি হবে না। ভারত থেকে শেখার অনেক কিছুই আছে।

দেশের বর্তমান অর্থনীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এম এ মান্নান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে ১৬-১৭শ প্রকল্প বাস্তবায়ন ভয়ংকর কিছু নয়। আমরা উন্নয়ন প্রকল্প যে সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারছি তার প্রমাণ হচ্ছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, সাক্ষরতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের উন্নতি।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

একনেক একনেক বৈঠক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর