Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুরদের পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা আজ কঠিন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ মে ২০২১ ২০:৩৩

ঢাকা: ক্ষেতমজুর সমতির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও আজ দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা অতিমারীতে আক্রান্ত। করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুরদের পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা আজ কঠিন হয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় করোনায় লকডাউন চলাকালীন সকল ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুর ও দরিদ্র মানুষের ঘরে খাদ্যর নিশ্চয়তা সরকারকেই দিতে হবে। একই দাবিতে আগামীকাল ৬ মে দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচি পালন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করার কর্মসুচি ঘোষণা করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৫ মে) বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির উদ্যোগে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতারা এ সব কথা বলেন। ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা, ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোতালেব হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কল্লোল বণিক, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, হকার্স আন্দোলনের নেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল ও ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার।

নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা মোকাবিলায় লকডাউন একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। কিন্তু লকডাউন কার্যকরের জন্য সাধারণ গরিব শ্রমজীবী মানুষের ঘরে খাদ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেই। ফলে মানুষ লকডাউনের মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাজের আশায় ঘর থেকে বের হয়ে যান। ফলে এসব মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। একদিকে ক্ষুধার যন্ত্রণা, অন্যদিকে করোনায় মৃত্যুকে সঙ্গী করেই এসব গরিব অসহায় মানুষের জীবন চলছে। নেতারা করোনা মহাসংকটে দেশের বেশিরভাগ এই গরিব মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, নগদ অর্থ ও চিকিৎসা সহায়তায় দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

নেতারা অবিলম্বে সকল গরিব মানুষের তালিকা করে তাদের পল্লী রেশনিং এর আওতায় এনে সারা বছর কন্ট্রোল দামে রেশন প্রদানের দাবি জানান। নেতারা করোনা মহামারিকালে সকল প্রকার ঋণের কিস্তি স্থগিত ও সুদ মওকুফের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘গ্রামের এসব শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক সময়ে ঋণ পরিশোধে এগিয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় এসব মানুষের সমস্যার কথা বিবেচনায় রেখে ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ ও সুদ মওকুফ করতে হবে।’

বক্তারা প্রান্তিক বর্গাচাষীদের কাছ থেকে সরকারি দামে ধান ক্রয়েরও দাবি জানান।

নেতারা বলেন, ‘গত বছর করোনা মহামারির সময়ে ৫০ লাখ পরিবারের তালিকা করে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে আমরা দেখেছি সেখানে ব্যাপক দুর্নীতি-লুটপাট ও দলীয়করণ হয়েছে। যাদের সহায়তা পাওয়ার কথা, তারা সেই টাকা পাননি। তালিকায় ভুয়া নাম ও দুর্নীতির কারণে বরাদ্দকৃত অনেক টাকা বিতরণই করা হয়নি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘গত বছরের দুর্নীতির কথা মাথায় রেখে এবার যাতে কোনো দুর্নীতি না হয় সঠিকভাবে তা দেখতে হবে।’

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত এক বছরে দেশে প্রায় আড়াই কোটি পরিবার নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। সুতরাং আমাদের দাবি এবার সকল গরিব পরিবারকে আর্থিক ও খাদ্য সহায়তার আওতায় আনতে হবে। কিন্তু সরকার মাত্র ৩৫ লাখ পরিবারকে ২৫শ’ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বক্তারা গ্রামীণ বরাদ্দ লুটপাট বন্ধের জোর দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, করোনায় বিনা চিকিৎসায় এরইমধ্যে অসংখ্য মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নেই। স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা আজ দেশবাসীর সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে। নেতৃবৃন্দ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চয়তার দাবি করেন সমাবেশে।

নেতারা আগামী বাজেটে গ্রামীণ শ্রমজীবী মানুষের জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখার জোর দাবি জানান।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

ক্ষেতমজুর ক্ষেতমজুর সমিতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর