Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হারুন ইজাহার ফের রিমান্ডে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ মে ২০২১ ১৯:৫৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সহিংস তাণ্ডবের অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হারুন ইজাহারকে আবারও দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশকে অনুমতি দিয়েছেন আদালত। এর আগে পৃথক তিন মামলায় তিন দিন করে মোট ৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১১ মে) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খন্দকার এ আদেশ দিয়েছেন বলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবদুল্লাহ আল মাসুম জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

হারুন ইজাহারের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘তিন মামলায় ৯ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। এরপর হারুন ইজাহারকে আজ (মঙ্গলবার) আদালতে হাজির করেছিল পুলিশ। হাটহাজারীর আরেকটি মামলায় সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল। আদালত শুনানি শেষে দুই দিন মঞ্জুর করেছেন। হারুন ইজাহার সশরীরে উপস্থিত ছিলেন এবং সরাসরি শুনানি হয়েছে, ভার্চুয়াল কোর্টে হয়নি।’

এর আগে, গত ২৮ এপ্রিল  রাত ১১টার দিকে নগরীর খুলশী থানার লালখানবাজারে  জামেয়াতুল উলুম আল-ইসলামিয়া লালখান বাজার মাদরাসা থেকে হারুন ইজাহারকে আটক করে র‌্যাবের একটি দল। এরপর তাকে নগরীর পতেঙ্গায় র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদের পর হারুন ইজাহারকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়। ২৯ এপ্রিল রাতে তাকে আদালতে হাজিরের পর কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর গত ৩ মে হাটহাজারীতে সহিংসতার অভিযোগে দায়ের হওয়া তিন মামলায় তাকে সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছিল পুলিশ। আদালত তিন দিন করে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

হারুন ইজাহারের (৪৬) বাবা ইজাহারুল ইসলাম লালখান বাজার মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা। জঙ্গিবাদি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বরাবর আলোচিত বাবা-ছেলে উভয়ই হেফাজতে ইসলামের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। হারুন ইজাহার হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক ছিলেন।

উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন গত ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় ভাঙচুর, স্থানীয় ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে হেফাজতে ইসলামের চার কর্মী নিহত হন। এর জেরে তিন দিন ধরে হাটহাজারী থানার অদূরে হেফাজতের মূল ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে ইটের দেওয়াল তুলে অবরোধ তৈরি করে রাখে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। একই ঘটনার জেরে চট্টগ্রামের পটিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় প্রথমে সাতটি মামলা দায়ের করা হয়, যাতে কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। গত ২২ এপ্রিল আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে দু’টিতে প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে। আরেক মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলালসহ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

এদিকে, সংঘাতের পর থেকে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব ও মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক হারুন ইজাহার, প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়জীসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষপর্যায়ের নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতার নামে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছিল হেফাজতে ইসলাম, যাতে ইন্ধন দিয়েছিল বিএনপি ও জামায়াত।

তবে হেফাজতের সাবেক আমির জুনায়েদ বাবুনগরী কয়েকবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বার্তা ও গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে দাবি করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। এমনকি হেফাজতে ইসলাম ‘সরকারবিরোধী’ নয় বা বর্তমান সরকারকে হটিয়ে অন্য কাউকে ক্ষমতায় বসানোর কোনো এজেন্ডা হেফাজতের ছিল না বলে বাবুনগরী দাবি করেন। এ অবস্থায় হেফাজত নেতাদের একটি দল দুই দফায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে বৈঠকও করেন। তবে হেফাজতের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে।

গত ২৫ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে আকস্মিকভাবে জুনায়েদ বাবুনগরী ফেসবুকে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন। আবার এ ঘোষণার রেশ না কাটতেই রাত সাড়ে ৩টার দিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ফেসবুক পেজ থেকে তিন সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথাও প্রচার করা হয়। পরে আরও দু’জনকে ওই কমিটির সদস্য হিসেবে সংযুক্ত করার কথাও জানানো হয়।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

জঙ্গি কর্মকাণ্ড রিমান্ড হারুন ইজহার

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর