অন্যরা যেখানে যেতে পারেনি, নগদ সেখানে পৌঁছেছে
২০ মে ২০২১ ২১:১৭
ঢাকা: সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বড় শ্বেতহস্তী ব্যাংকগুলো যেখানে যেতে পারেনি, সেখানে নগদ যেতে পেরেছে, এটাকে আর্থিক অন্তর্ভূক্তির বড় উদ্যোগ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
বুধবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ আয়োজিত ‘সবাইকে এগিয়ে দেবে আর্থিক অন্তর্ভূক্তির উদ্ভাবন’ শীর্ষক এক ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে সিপিডি ফেলো এবং এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নগদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নগদ’র চিফ পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার সোলায়মান সুখন।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আগে একটি চেক ব্যাংকে জমা দিলে, সেটা অনেকগুলো পথ পেরিয়ে ক্যাশ হয়ে আসতে অনেক সময় লাগতো। কিন্তু এমএফএস’র কারণে সম্পূর্ণ নতুন কাজের এলাকা তৈরি হয়েছে। এর ফলে কী কী পরিবর্তন এসেছে, তা গবেষণা করে দেখা যেতে পারে। এ সময় তিনি বলেন, দেশে মালিক ও শ্রমিক দ্বৈত ভূমিকায় থাকা মানুষের পুনরুজ্জীবনের জন্য ডিজিটাল সমাধান আনতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে শ্রমিক সংগঠন পর্যন্ত নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারলে ডিজিটাল সমাধান কাজে দেবে। এক্ষেত্রে চেম্বার অব কমার্সকে নিয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় আছে, তাদের কাছেও যেতে হবে।
সরকারি সেবা ও সহায়তা বিতরণের জন্যে জাতীয় তথ্য ভান্ডার গড়ার ওপর গুরুত্ব দেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বলেন, করোনার সময় অসহায় মানুষকে সাহায্য দিতে গিয়ে যে তথ্য ভান্ডার তৈরি হলো, এটাকে জাতীয় তথ্য ভান্ডার বানানো যায় কি না? সেটা নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এই তথ্য ভান্ডার ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন সহায়তা পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অতিমারির সময়ে কিছু বিষয় সামনে এসেছে। অনলাইনে শিক্ষা দেওয়ার মতো কিছু বিষয় ঘটেছে। এর জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সহজলভ্য করা প্রয়োজন। দরিদ্র মানুষদের চাল-ডালের পাশাপাশি স্মার্টফোন এবং গিগাবাইট দিতে হবে যেনো তারা আর্থিক অন্তর্ভূক্তিতে সম্পৃক্ত হতে পারে।
এ সময় নগদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, কোভিডের সময় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা অনেক উন্নত দেশও নিতে পারেনি। যারা সর্বোচ্চ ট্যাক্স দেয়, অনেক উন্নত দেশে শুধু তাদের অনুদান দিয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী সহায়তা দিয়েছেন সাধারণ মানুষকে।
তানভীর এ মিশুক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পৌঁছে দিতে গিয়ে দেখা গেলো ডাটাবেজ ঠিক ছিল না। যে কারণে, এনআইডি ধরে নম্বরগুলো চেক করতে হয়েছে। তখন অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তবে সেই মুহূর্তে মোবাইল অপারেটররা সহযোগিতা করেছে। তখন নগদ’র কর্মীরা দিনরাত কাজ করে ৩৬ লাখ মানুষের কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পৌঁছে দিয়েছে। বাকিদের তথ্যের ঘাটতি থাকায় পৌছাঁনো সম্ভব হয়নি।
সব সময় সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করে নগদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, তাদের কাছে তিন কোটি মানুষের ডাটাবেজ তৈরি আছে। ‘নগদ’ বাজারে উদ্ভাবন নিয়ে এসেছে। ফলে আগে যেখানে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে সাত থেকে দশ দিন লাগতো এখন সেটা মুহুর্তের ব্যপার। যে কোনো মোবাইল নম্বর থেকে *১৬৭# ডায়াল করে পিন সেট করেই এখন নগদ অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। নগদ’র উদ্ভাববন আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে তরান্বিত করেছে। শুরুতে অনেকে বিরোধীতা করলেও এখন সবাই মেনে নিয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে অনেকে নগদ’র এই পদ্ধতি অনুসরণ করবে। সাধারণ মানুষের জীবন সহজ করার ব্রত নিয়ে নগদ শুরু থেকে কাজ করেছে, ফলে সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া অব্যহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, মানুষ বাঁচলে দেশ বাঁচবে – স্লোগানকে সামনে রেখে নগদ ধারাবাহিকভাবে এই ফেসবুক লাইভ আয়োজন করছে।
সারাবাংলা/একেএম