১১ দিন পর যুদ্ধবিরতি গাজায়, ২ পক্ষেরই বিজয় দাবি
২১ মে ২০২১ ১২:২৮
১১ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে গাজা উপত্যকায়। ইসরাইল মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির সিদ্ধান্তের পর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস সম্মত হলে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ১১ দিনের যুদ্ধে ইসরাইল, হামাস— দুই পক্ষই নিজেদের জয়ী দাবি করেছে।
আল জাজিরা, বিবিসি ও জেরুজালেম পোস্টের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২০ মে) স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ২টা থেকে কার্যকর হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি। এর সঙ্গে সঙ্গেই গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি রাস্তায় নেমে আসে। ‘আল্লাহু আকবর’, ‘আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গাজা। তারা বিজয়সূক ‘ভি’ চিহ্ন দেখাচ্ছিল।
আরও পড়ুন- ইয়াসির আরাফাতের পথই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পথ
এর আগে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, মিশরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটি সেই প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এরপর ফিলিস্তিনি দুই সংগঠন হামাস ও ইসলামিক জিহাদও যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার সময় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
এই যুদ্ধবিরতিকেই বড় অগ্রগতি মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর আগেও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো বাইডেন বলেছেন, এই যুদ্ধবিরতি দুই পক্ষের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় সুযোগ নিয়ে আসতে পারে।
আরও পড়ুন- যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরাইল ও হামাস
পূর্ব জেরুজালেমকে ঘিরে উত্তেজেনাকে কেন্দ্র করে ১০ মে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। আল আকসা মসজিদেও অভিযান চালায় ইসরাইলি পুলিশ। এর জের ধরে রকেট হামলা চালায় হামাস, পাল্টা বিমান হামলা শুরু করেন ইসরাইল। দুই পক্ষের অব্যাহত আক্রমণে গাজায় ৬৫ শিশুসহ ২৩২ ফিলিস্তিনির মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে হামাসের হামলায় কমপক্ষে ১২ জন ইসরাইলি নাগরিকের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়।
যুদ্ধবিরতির আগের দিন বৃহস্পতিবারেও উত্তর গাজায় হামাসের স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে কমপক্ষে একশ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজা থেকেও হামাস তিন শতাধিক রকেট হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিদাই জিলবারম্যান জানিয়েছেন, আকাশপথে হামলা করতে সক্ষম শতাধিক যন্ত্র গাজার দিকে তাক করা আছে। হামাস কোনোভাবে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে রকেট হামলা চালালে এসব আকাশযান গাজায় হামলে পড়বে।
অন্যদিকে, বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত এল-রেশিকও বলেছেন, সত্যিই আজ যুদ্ধ শেষ হয়েছে। কিন্তু নেতানিয়াহু এবং বাকি বিশ্বের এটি জেনে রাখা উচিত যে, আমরা অস্ত্র ত্যাগ করিনি। আমাদের প্রতিরোধ সক্ষমতাও দিন দিন বাড়বে।
সারাবাংলা/টিআর