নৌ নিরাপত্তা খাতে দুর্বলতার কথা স্বীকার করলেন প্রতিমন্ত্রী
২৩ মে ২০২১ ১৫:৩২
ঢাকা: দেশের নৌ নিরাপত্তা খাতে দুর্বলতার কথা স্বীকার করলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ‘নোঙর বাংলাদেশ’ আয়োজিত ’২৩ মে জাতীয় নৌ নিরাপত্তা দিবস’ ঘোষণার দাবিতে রোববার (২৩ মে) ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী এই খাতের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে তা উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ’২৩ মে জাতীয় নৌ নিরাপত্তা দিবস’ ঘোষণার দাবির প্রতি প্রতিমন্ত্রী একাত্মতা ঘোষণা করে এই বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই দেশ নদীমাতৃক দেশ, নদী ছাড়া বাংলাদেশ ভাবা যায় না। নদী না থাকলে বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে। নদীর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে। যা আমরা এরই মধ্যে চরাঞ্চলে দেখতে পাচ্ছি, সেখানে শুস্ক মৌসুমে পানিরর ঘাটতি থাকে। এ ছাড়া বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকার কারণে আমরা ঝুঁকির মধ্যে আছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো পরিবেশ ও যাত্রীবান্ধব না। আমাদের এই খাতে দক্ষ জনবল এবং পর্যাপ্ত প্রতিষ্ঠানের অভাব আছে। নৌ চলাচল ব্যবস্থায় ব্যবস্থাপনার ঘাটতি আছে। এই দুর্বলতাগুলো দীর্ঘদিনে একটু একটু করে সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তা কাটিয়ে ওঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, ‘আমাদের যে নৌপথ এবং নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে তার শতভাগ সুষ্ঠু ব্যবহারে আমরা কাজ করছি। নৌপথে আমরা একটিও দুর্ঘটনা আশা করি না। এরই মধ্যে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে এসেছে, সামনে আরও কমবে।’
মূল প্রবন্ধ পাঠে নোঙর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুমন শামস বলেন, ‘নৌপথে কোনোভাবেই যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে না। প্রতি বছরই দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। গত ২২ বছরে সাত শতাধিক ছোট-বড় নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণহানি ঘটেছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষের। প্রতিটি ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও খুব বেশি রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। কিছু রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। আসলে কমিটির রিপোর্ট বাস্তবায়ন হয় না বলে দুর্ঘটনাও বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নোঙর বাংলাদেশ ১৬ বছর ধরে বহুবিধ কর্মসূচির মাধ্যমে ২৩ মে দিবসটি নৌ-নিরাপত্তা দিবস হিসেবে পালন করছে। ২৩ মে তারিখে নোঙরের জন্য একটি মাইলস্টোন হিসেবে বাংলাদেশে প্রথম আন্দোলন শুরু। এই দিনটিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত আবেদন, গত ৫০ বছরে নৌপথে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ২৩ মে দিনটিকে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণা করে আগামী দিনের নৌপথের যাত্রীদের মধ্যে স্থায়ী সচেতনতা গড়ে তোলার ব্যবস্থা করে দিলে একদিন সারা বিশ্বে এই দিবস পালিত হবে।’
গণমাধ্যমকর্মী এমএকে জিলানী’র সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, নেভাল আর্কিটেক্ট ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ার জনাব শামসুল আলম, চ্যানেল আই’য়ের বার্তা সম্পাদক মীর মাশরুর জামান, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন এবং গ্রীণ সেভার্স এর প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি।
সারাবাংলা/জেআইএল/একে