বরগুনায় ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি, প্রস্তুত ৬৪০ আশ্রয়কেন্দ্র
২৬ মে ২০২১ ০০:৪৫
বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলায় সোমবার (২৪ মে) রাত ১০টার পর থেকে এখন পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জেলা প্রশাসন। দুর্যোগের সময় মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তর করতে জেলার ৬৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও, বরগুনার ছয়টি উপজেলায় একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) একটি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। সম্ভাব্য ঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ জরুরি মেরামতের তথ্য এই কন্ট্রোল রুমে জানানো যাবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় নগদ এক কোটি ৩১ লাখ টাকা মজুত রয়েছে। খাদ্য সহায়তা হিসেবে মজুত আছে ৩৫৮ মেট্রিক টন চাল।
তালতলীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসাইন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেয়ে তালতলীতে ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য ঝড় মোকাবিলায় তার প্রশাসন প্রস্তুত। নিশানবাড়ীয়া এবং সোনাকাটা এই দুটি ইউনিয়নকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
পাথরঘাটার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা সুলতানা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলায় ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও একটি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। সকল মাছধরা ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। যদিও সাগরে মাছধরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় সব ট্রলারই উপকূলের কাছাকাছি রয়েছে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন মারিয়া হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য জেলায় মোট ছয়টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ছয়জন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আর একটি কন্ট্রোল রুম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, জেলা পযায়ের দুর্যোগ প্রস্তুতি টিমের সঙ্গে প্রস্তুতিমুলক সভা হয়েছে। দুর্যোগের সময় মানুষকে নিরাপদ রাখতে জেলায় ৬৪০ আশ্রয়কেন্দ্র ও ছয়টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। ঝড় যদি উপকূলে আঘাত হানে, তাহলে, সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল ১১টা থেকে উপকূলের নিম্ন অঞ্চলে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়েই চলছে। বরগুনার সদর উপজেলার কুমিরমারা এলাকায় পাউবোর বাঁধের বাইরে বসবাসরতদের বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে। এর বাইরে, পায়রা এবং বিষখালী নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট পানি বেড়ে গেছে। বেড়িবাঁধ এর বাইরে পানি ঢুকে পড়ায় পরিবারগুলো বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সারাবাংলা/একেএম