প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে জামিন জালিয়াতির আসামি
২৭ মে ২০২১ ১৪:৩৮
বগুড়া: হাইকোর্টে জামিন জালিয়াতি এবং প্রতারণার ঘটনায় ঢাকার শাহাবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় দুই অ্যাডভোকেটসহ বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের একাংশের নেতা পৌর কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-হাইকোর্ট বিভাগের সহকারী রেজিষ্টার ফৌজদারী-২ মো. জাকির হোসেন পাটোয়ারী।
ওই মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও অজ্ঞাত কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। এমন কি ওই আসামিরা অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। এরকম আসামিরা সাধারণত শোন অ্যারেস্ট হয়ে থাকেন। অথচ, এই মামলার আসামিদের ক্ষেত্রে তা হয়নি — কেন কর্তৃপক্ষের এমন আচরণ তা নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
তবে, শাহাবাগ থানা পুলিশ এ মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আইনজীবীর সহকারী মো. সোহাগ শেখকে (২৮) গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাইকোর্ট বিভাগের ২০ নম্বর আদালতের নথি জালিয়াতি করে ভুয়া আগাম জামিনের আদেশনামা তৈরীতে জড়িত সোহাগ শেখ (২৮) কে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, তার সহযোগী অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার এবং তৈরিকৃত জাবেদা নকলে বর্ণিত অ্যাডভোকেট মো. আহসান হাবিব, কম্পোজিটর জি মোক্তাদির, পাঠক ও পরীক্ষক এবং প্রত্যায়িত অবিকল প্রতিলিপি সিলের স্থলে সই করা ব্যক্তিদের শনাক্তসহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে, মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতার এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বগুড়া জেলা পুলিশের কাছে নথিপত্র প্রেরণ করা হলেও এখন পর্যন্ত আসামিদের গ্রেফতার বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের নির্বাচন নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুর, মারপিট এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিতে গিয়ে বগুড়া এবং ঢাকার দুইজন আইনজীবীর যোগসাজশে আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনের নামে ভুয়া আগাম জামিননামা তৈরী করে বগুড়ায় পাঠায়।
বিষয়টি হাইকোর্ট বিভাগের নজরে আসলে আসামিদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বগুড়ার পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু, এখন পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হয়নি। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, হাইকোর্ট থেকে একটি চিঠি এসেছিল। জানানো হয়েছিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বিভাগ মামলা দায়ের করবে। পরবর্তীতে আর কোনো কাগজপত্র থানায় আসেনি।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র তারা পাননি।
সারাবাংলা/একেএম