দ্রুততার সঙ্গে চলছে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ
৩০ মে ২০২১ ২১:১৬
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলের বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ দ্রুততার সঙ্গে চলছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
রোববার (৩০ মে) দুপুরে রাজধানীর পান্থপথের পানি ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব তথ্য জানান।
উপমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ওই অঞ্চলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে নেওয়া মেগা প্রকল্পসমূহ দ্রুত একনেকে পাস করার বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে তিনি পানি ভবনে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উপকূলের পরিস্থিতি তুলে ধরেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এ কে এম ওয়াহেদ উদ্দিন চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ফজলুর রশীদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন সরকারসহ অন্যরা।
এছাড়া উপমন্ত্রীর কাছে নাগরিক সমাজের সুপারিশ তুলে ধরেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ প্রধানমন্ত্রী নিজেই মনিটারিং করছেন বলে জানান উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। তিনি বলেন, ঝড়ের দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
উপমন্ত্রী আরও বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের চাহিদার প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারের জন্য বস্তা, বাঁশ, টিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা মাঠে থেকে কাজের তদারকি করছেন। পানি সচিব নিজেই ওই এলাকায় আছেন। ২/৪ দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করে জোয়ারের পানি আটকানো সম্ভব হবে।’ এছাড়া বেড়িবাঁধ সংস্কারের চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
এসময় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘দীর্ঘদিন অবহেলার কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানেই কোনোভাবেই জোয়ারের পানির চাপ সহ্য করতে পারছে না। এজন্য সরকার টেকসই বাঁধ নির্মাণের মেগা প্রকল্প নিয়েছে। সেই কাজ শুরু হওয়ার আগে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসমূহ জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। উপমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। স্থানীয় জনগণও স্বতঃস্ফুর্তভাবে বাঁধ সংস্কারে অংশ নিচ্ছেন।’
এদিকে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, সুন্দরবনের তীরবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে সহায়তার জন্য খুলনা জেলার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার জন্য অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু’র চাহিদাপত্রের ভিত্তিতে ইউনিয়ন প্রতি তিন লাখ টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
চলতি সপ্তাহের উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের ওই সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও
ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ খুলনা-সাতক্ষীরা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পানিসম্পদ উপমন্ত্রী সংস্কার