বাজেট পেশ কাল, সংসদে কঠোর সতর্কতা
২ জুন ২০২১ ১৯:৫০
ঢাকা: আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় শুরু হতে যাওয়া অধিবেশনে এই বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা শেষে আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হবে সংসদে। বাজেট উত্থাপন ঘিরে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে সংসদ ভবনে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যেও শুরু করতে হয়েছে বাজেট অধিবেশন। তবে এ ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা মেনেই বুধবার (২ জুন) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশন তথা বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশন শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির ভয়াবহতার কারণে সংসদ অধিবেশন শুরু হলেও এর আগে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়নি। কঠোর সতর্কতায় শুরু হওয়া এই অধিবেশনে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ স্বল্পসংখ্যক সংসদ সদস্য অংশ নিয়েছেন প্রথম দিনে। সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র সংসদ সদস্যই অনুপস্থিত ছিলেন প্রথম দিন।
বুধবার শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত সংসদ সদস্যরা বিগত দিনের আসন বণ্টন এড়িয়ে করোনা সতর্কতা মেনে আসন গ্রহণ করেন। অধিবেশন কক্ষে এক থেকে দু’টি আসন পর পর তারা বসেছিলেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস ও মাথায় ক্যাপ ছিল। সংসদ পরিচালনায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এদিকে, সংসদ ভবনের প্রবেশমুখে সবাইকেই জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের তাপমাত্রা মাপা হয়। এছাড়া নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের শুরুতেই সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এই অধিবেশনে বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী। এরপর আলোচনা শেষে আগামী ২৯ জুন অর্থবিল ও ৩০ জুন বাজেট পাস হবে।
এরপর শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেন সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যরা। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিতে শোক প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়। এরপর প্রয়াতদের স্মরণে নিরাবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। এরপর দিনের অন্যান্য কার্যসূটি স্থগিত করে অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
এর আগে, করোনা মহামারির কারণে গত বছর মাত্র ৯ কার্যদিবস চলে বাজেট অধিবেশন। সেটি ছিল ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম বাজেট অধিবেশন। এবারও স্বল্পসংখ্যক কার্যদিবসেই শেষ করা হবে বাজেট অধিবেশন। গতবারের বাজেট অধিবেশনের মতো এবারও তালিকা করে সংসদ সদস্যরা বৈঠকে অংশ নেবেন। প্রতিটি কার্যদিবসে উপস্থিতি সংখ্যা ১০০ থেকে ১২০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে। এক্ষেত্রে একজন সংসদ সদস্য তিন থেকে চার কার্যদিবস অধিবেশনে যোগ দেবেন।
অধিবেশনে যোগদানের জন্য সংসদ সদস্যদের করোনাভাইরাস নেগেটিভ সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। একদিন কোভিড-১৯ টেস্টের নেগেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে পরপর দুই দিন অধিবেশনে যোগ দেওয়া যাবে। এজন্য আইনপ্রণেতাদের একাধিকবার নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন পড়বে। এছাড়া সংসদের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংসদ অধিবেশনের খবর সংগ্রহে নিয়োজিত গণমাধ্যমকর্মীদেরও করোনা নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর