চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের পর এবার বিশেষ বিধিনিষেধ
৭ জুন ২০২১ ২১:২০
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনের মেয়াদ শেষে তা আর বাড়ানো হয়নি। এবার দেওয়া হয়েছে ৭ দিনের বিশেষ বিধিনিষেধ।
আগামীকাল (৮ জুন) থেকে শুরু হওয়া এই বিধিনিষেধ চলাকালীন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে সকল ধরনের দোকানপাট ও শপিংমল। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ওমাস্ক পরিধান করতে হবে। মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া কেউ যাতায়াত করতে পারবে না। রিকশায় একজন ও অটোরিকশায় ২ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করা যাবে।
সোমবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ এ ঘোষণা দেন। এসময় বিশেষ বিধিনিষেধের আওতায় ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এর আগে প্রথম দফায় গত ২৫ মে রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ৩১মে রাত ১২টা পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। দ্বিতীয়বার বাড়ানো কঠোর লকডাউন সোমবার (১ জুন) রাত থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৭ মে মধ্যরাত পর্যন্ত।
জেলা প্রশাসক বলেন, বিশেষ বিধিনিষেধের আওতায় সবধরনের বিয়ে, জন্মদিন, পিকনিকসহ সকল সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। হোটেল-রেস্তোরাঁ ও খাবার দোকান সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে জেলার প্রধান অর্থকরী ফল আমের মৌসুমে আমচাষী, ব্যবসায়ী, আড়তদার ও রফতানিকারকদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আম ব্যবসায়ীদের জেলায় প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না। তারা জেলায় প্রবেশ করতে পারবে ও কোনোরকম বাধা ছাড়াই ব্যবসা করতে পারবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর, নাচোল ও ভোলাহাট উপজেলার বড় আম বাজার স্টেডিয়াম, কলেজ মাঠে স্থানান্তর করতে হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে উপজেলা প্রশাসন।
তিনি আরও বলেন, জেলার মধ্যে চলা বাসগুলো অর্ধেক সিটে যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারবে। তবে সকল আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিসেবা- এম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী ট্রাক চালু থাকবে।
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, আগামী সাত দিন জেলার সকল সাপ্তাহিক হাট-বাজার বন্ধ থাকবে। কেউ জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলে অব্যশই মাস্ক পরিধান করে যেতে হবে। এমনকি জুম্মাসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ২০ জনের বেশি অংশ নিতে পারবে না। অন্যান্য উপাসনালয়েও সমান সংখ্যক মানুষ উপাসনা করতে পারবে।
আম বাজারজাতকরণ ও পরিবহনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমের আড়তের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। তবে সরাসরি বাগান থেকে ট্রাকে আম পরিবহন করা যাবে। এছাড়াও অনলাইনে অর্ডার গ্রহণ করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম কেনাবেচা করা যাবে। এছাড়াও শিল্প কলকারখানার শ্রমিকরা নিজস্ব পরিবহনে যাতায়াত করবে। এছাড়া জরুরি পরিসেবা যেমন- কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য পরিবহন, কোভিড ভ্যাকসিন, ত্রাণ বিতরণ, বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী, ইন্টারনেট লাইন সংযোগ সংশ্লিষ্টরা বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, ভালো ফলাফল পেতে হলে অব্যশই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শুধু মাস্ক পরিধান করলেই ৯৬ শতাংশ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তাই এর কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি কিছুটা স্থির হয়েছে। দৃশ্যমান উন্নতি দেখতে আরো ৫-৭ দিন সময় লাগবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার এএইচএম আব্দুর রকিব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাকিউল ইসলামসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
সারাবাংলা/এসএসএ