Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নড়াইল পৌরসভার বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ

মির্জা মাহামুদ হোসেন রন্টু
১১ জুন ২০২১ ১১:১২

নড়াইল: নড়াইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ট্রাক, পিক-আপ মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে টোল আদায়ের ইজারা দিয়ে জেলার মহাসড়কে পণ্যবাহী পরিবহন থেকে টোল আদায় করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লাঠির মাথায় লাল কাপড় বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে কথিত টোল আদায়কারীরা। পণ্যবাহী ট্রাক, ট্যাংকলরি, পিকআপ, নছিমন, ইজিবাইক দেখা মাত্রই লাল কাপড় বাঁধা লাঠি উঁচু করে ধরে তারা। গাড়ি দাঁড়ানো মাত্রই চালক বা হেলপারের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় নির্ধারিত টাকা লেখা স্লিপ। এভাবে স্লিপ দিয়ে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে চলছে টোল আদায়!

বিজ্ঞাপন

এই টোল আদায় বন্ধের জন্য ট্রাক, ট্যাংকলরি, পিকআপ মালিক সমিতির নেতা মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস নড়াইল জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, পণ্যবাহী পরিবহনের চালকদের হাতে ৩০ টাকার রশিদ ধরিয়ে দিয়ে জোর করেই টাকা আদায় করা হয়। দেশের কোনো পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এভাবে টোল আদায় করে না। কিন্তু নড়াইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ টেন্ডারের মাধ্যমে টোল আদায়ের ইজারা দিয়েছে।

সূত্র জানায়, গত পয়লা বৈশাখ থেকে ইজারাদার রজিবুল ইসলাম ২৭ লাখ টাকায় ১ বছরের জন্য নড়াইল পৌরসভা বাস টার্মিনাল টোল আদায়ের ইজারা নিয়েছেন। এরপর নড়াইল শহরের প্রত্যেকটি প্রবেশদ্বারে, মহাসড়কের একাধিক স্থানে লাঠির মাথায় লাল কাপড় বেঁধে রশিদ দিয়ে টাকা নিচ্ছেন। প্রত্যেকটি স্থানেই ২/৩ জনের একটি দল থাকে। যাদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি থাকে। লাঠির মাথায় বাঁধা থাকে লাল কাপড়। কোনো যানবাহনের চালক টাকা দিতে না চাইলে ওই লাঠি দিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়।

বিজ্ঞাপন

যাত্রীবাহি বাস মিনিবাস ওই টার্মিনাল ব্যবহার না করলেও পৌরসভা এলাকার মধ্য দিয়ে যাওয়া যশোর-কালনা মহাসড়ক দিয়ে চলাচলরত সব যানবাহনকেই টোল দিতে হয়।

বর্তমানে নড়াইল জেলা শহরের প্রবেশপথ নতুন বাস টার্মিনাল, সুলতান ব্রিজ, ধোপাখোলা মোড় ও পুরাতন বাস টার্মিনাল হতে পৌর টোল আদায়ের নামে চাঁদা তোলা হচ্ছে।

নড়াইল জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ বলেন, ‘নড়াইল পৌরসভা টোল আদায়ের নামে প্রকাশ্যে রশিদ দিয়ে ইজারাদারের মাধ্যমে অর্থ আদায় করছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ টোল আদায় বন্ধ হওয়া জরুরি।’

নড়াইল জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরি মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি সোহরাব হোসেন জানান, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা কর্তৃক পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন মহাসড়কে বাস/ট্রাক টার্মিনালের বাইরে বক্স বসিয়ে এবং বিভিন্ন কৌশলে টোল/ট্যাক্স আদায় করা সম্পূর্ণ অবৈধ। এই নির্দেশ অমান্য করে নড়াইল পৌরসভা টোল আদায়ের ইজারা দিয়েছে। জেলার উপর দিয়ে গাড়ী গেলেই চাঁদা দিতে হচ্ছে। চাঁদা দিতে গিয়ে ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে। তিনি চাঁদাবাজি বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু বলেন, ‘পৌরসভা কর্তৃপক্ষ নিয়ম না মেনেই সড়কে চলাচলকারি পণ্যবাহী পরিবহন হতে অর্থ আদায় করছে। এ নিয়ে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।’ তিনিও এই টোলের নামে চাঁদা আদায় বন্ধের জন্য পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

নড়াইল পৌরসভায় ট্রাক টার্মিনাল না থাকার পরও পৌর টোল আদায়ের ব্যাপারে মেয়র আঞ্জুমান আরা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া টোল আদায়ের বৈধতার বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।

সারাবাংলা/এমও

নড়াইল পৌরসভা