Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মদিন উদযাপন

সারাবাংলা ডেস্ক
২১ জুন ২০২১ ০০:০৭

ঢাকা: নারীমুক্তি ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে ভার্চুয়ালি কবির জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে।

রোববার (২০ জুন) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) পৃথক পৃথকভাবে কবির জন্মদিন পালন করে। সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মদিন উপলক্ষে স্মারকবক্তৃতা ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া অনলাইনে কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা প্রদান ও সংগীতানুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। ‘সুফিয়া কামাল ও বাংলাদেশের নারীবাদী আন্দোলন’ শীর্ষক স্মারকবক্তৃতা প্রদান করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ।

স্মারকবক্তৃতায় অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, আমাদের জাতির আশা-প্রশ্বাসের নাম কবি সুফিয়া কামাল। তিনি জন্মেছিলেন অবরুদ্ধ পরিবেশে। আজ থেকে ৭০-৮০ বছর আগে তিনি যেভাবে নারীর মুক্তির কথা ভেবেছেন, মানুষকে সংগঠিত করেছেন তা ভাবলেও বিস্মিত হতে হয়। আজ নারীবাদের যে তাত্ত্বিক কাঠামো তা সুফিয়া কামালের সময়ে ছিল না। অথচ তিনি সমাজের বিকাশের চেয়ে নারীর বিকাশকে বড় করে দেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, সুফিয়া কামাল কবিতার মাধ্যমে কিভাবে তার নারীবাদী চেতনা বিকশিত হয়েছে তা তিনি উপস্থাপন করেন। তিনি দীর্ঘ ৭০ বছরে কেবল কবিতা চর্চা করেছেন, নারীর জাগরণের সংগ্রামে এক শক্তির প্রতীক। তিনি নানা বিষয়ে কবিতা লিখেছেন এবং বাংলা কবিতার ধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি নারীদের জ্ঞানার্জনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ তিনি মনে করতেন নারীর মুক্তির জন্য নারীকেই এগিয়ে আসতে হবে। নারীরা এগিয়ে আসলেই সম্ভব সমাজের পুনর্জাগরণ। পুরুষতন্ত্রকে উপেক্ষা করে তিনি কবিতার মধ্য দিয়ে নারীকে সমৃদ্ধির পথে, মুক্তির পথে, কল্যাণের পথে আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীবাদী আন্দোলন আজ নানাভাবে বিস্তৃত। ১৯৭০ সালের ৪ এপ্রিল কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে মহিলা পরিষদ গড়ে ওঠার পর যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় আজও তা চলমান আছে।

তিনি আরও বলেন, নারীবাদ আন্দোলন কখনো এক সরলরেখায় চলে না। মহিলা পরিষদের চলার ধারাও তেমন পরিবর্তন হয়েছে। আন্দোলন অগ্রসর করতে সংগঠন সবসময় সুফিয়া কামালের দেখানো পথই অনুসরণ করবে। নারীর জীবনে আজ নানা সক্ষমতা অর্জন হয়েছে কিন্তু পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো পরিবর্তন হয়নি। এর জন্য সংগ্রামের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা-২০২০ (মরণোত্তর) প্রদান করা হয় সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ ও আন্দোলনকর্মী নূরজাহান মুরশিদকে এবং কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয় জনকল্যাণমূলক সংগঠন কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টকে।

এদিকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) পক্ষ থেকেও কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়। সংগঠনটির ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান হয়।

অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রায় শতাধিক মানুষ ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মদিন উদযাপন করে।

এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন— শিক্ষক ও গবেষক আব্দুল্লাহ আল মোহন, কবিপুত্র সাজেদ কামাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. ফারজানা সিদ্দিকা। আর সমাপনী বক্তব্য রাখেন এমএসএফ’র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

সারাবাংলা/এনএস

১১১তম জন্মদিন উদযাপন কবি সুফিয়া কামাল