‘পাবজি গেমে আছে ফাঁক ফোকর, কারণ ছাড়াই ব্যান ১০ দল’
২৪ জুন ২০২১ ১৫:১১
ঢাকা: জনপ্রিয় পাবজি গেমের টুর্নামেন্টে বেশকিছু ফাঁক ফোকর রয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে পছন্দের দলকে টুর্নামেন্টে উর্ত্তীণ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন গেমের বাংলাদেশীয় প্রধান। সম্প্রতি একটি টুর্নামেন্টে দেশের ১০টি দলকে কোনো কারণ ছাড়াই ব্যান করা হয়েছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ওই দলগুলো। বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে সম্প্রতি পাবজি গেম বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হলে সংস্থাটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে রিপোর্ট করতে উসকে দেন গেমের বাংলাদেশীয় প্রধান কাজী আরাফাত সুমন— এমনটাই অভিযোগ গেমারদের।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পাবজি গেইমস নিয়ন্ত্রণ ও ই স্পোর্টস এ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে গেম সংশ্লিষ্টরাই এমন অভিযোগ করেন। পাবজি মোবাইল প্লেয়ার, মালিক ও বিনিয়োগকারীদের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারী মাসফিকুর রহমান, গেমার সাদমান, তানভির ও জুসান উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে গেমার সাদমান বলেন, ‘গেমের ভেতর কিছু অনিয়ম রয়েছে, যেগুলো অবশ্যই একজন গেমারের জন্য পীড়াদায়ক। এই পেইনটা ডিপ্রেশন বা অবসাদ নয়, এটা গেমের দোষ না। যে ইস্যুগুলো বা সিচুয়েশন তৈরি হয়েছে, সেগুলো আমাদের পেইন দিচ্ছে।’
গেমটি প্রতারণামূলক, কর্তৃপক্ষই দুর্বলতা রেখে দিয়েছে- তাহলে আপনারা এই গেম খেলছেন কেন, বিনিয়োগ করছেন কেন?- এমন প্রশ্নের উত্তরে এই গেমার বলেন, ‘আমরা যদি দেখি একটি পরীক্ষার হলে শিক্ষক গার্ড না দিয়ে সবাইকে দেখাদেখির সুযোগ দিচ্ছে, টিচারের কাছে যারা পড়ছে তাদের বেশি সুযোগ দিচ্ছে, যারা তার কাছে পড়ছে না তাদের ক্লাস থেকে বের করে দিচ্ছে- ঠিক তেমনি এই ফোরাম গেইম অর্গানাইজ করছে। গেইম যে কেউ খেলতে পারছে- সেটাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু গেইমের ভেতের যে টুর্নামেন্টগুলো হয়, টুর্নামেন্টের ভেতরে কিছু ফল্ট আছে। যারা যোগ্য, যাদের উত্তীর্ণ হওয়ার কথা, তারা উত্তীর্ণ না হয়ে কিছু একটা ফাঁক ফোকর ব্যবহার করে সিলেক্টিভ কিছু টিমকে ব্যান করে দিচ্ছে। সিলেক্টিভ কিছু মানুষকে ব্যান করে তার (গেমসের বাংলাদেশ প্রধান কাজী আরাফাত সুমন) নিজস্ব কিছু মানুষকে, পার্সোনাল পাওয়ার ইউজ করে নিজস্ব কিছু টিমকে ঢুকানোর চেষ্টা করছে। এটা কোনোভাবেই গেমের মাধ্যমে হচ্ছে না, একজন মানুষের মাধ্যমে হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা আজ পাবজি মোবাইল বাংলাদেশ গেমিং সেক্টরের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে চলা প্রশাসনিক পদবী এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে চাই। পিএমএনসি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্য টেনসেন্ট গেমসের মাধ্যমে পরিচালিত একটি আনুষ্ঠানিক টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টটির বাছাই পর্বের বিতর্কিত ব্যবস্থা এবং অনায্যভাবে কয়েকটি দলের বহিষ্কার তরুণদের মধ্যে বিতর্ক এবং ক্রোধের সৃষ্টি করেছে।
পাবজি গেমসে ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে আয়োজকরা আরও বলেন, কাজী আরাফাত সুমন ব্যবসায়িক উন্নয়ন এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ই-স্পোর্টস প্রধান হিসাবে টেনসেন্ট গেমস কর্তৃক মনোনীত। তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অফিসিয়াল টুর্নামেন্টগুলোতে গেমিং দল এবং খেলোয়াড়দের নানারকমভাবে প্রতারিত করছেন। তিনি বাংলাদেশে পাবজি মোবাইল গেমস এবং টুর্নামেন্টের দেখভালের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও কোনো স্থানীয় দল কিংবা খেলোয়াড়দের প্রতি তেমন সহযোগী নন। যদিও তিনি এই গেমসের সঙ্গে সর্ম্পৃক্ত ছিলেন না, তবুও এই গেমটি বাংলাদেশে প্রকাশের পর থেকেই তার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল তরুণ খেলোয়াড়দের বিভ্রান্ত করে শীর্ষ অবস্থানে বসার এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসৎ সুবিধা নেওয়ার।
তারা বলেন, আনুষ্ঠানিক টুর্নামেন্ট খেলার পরে বিজয়ী খেলোয়াড়দের পুরষ্কার হিসেবে পাওয়া অর্থ প্রায় দুই বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে এবং প্রতিনিধিরা অর্থ হস্তান্তর সম্পর্কে এখনও কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেননি। আমাদের ধারণা, বিদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এই অর্থ স্থানান্তর করে সরকারের কাছে গোপন রাখছেন। এছাড়াও তরুণদের বিভ্রান্ত করে সরকারি সংস্থা বিটিআরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে উসকে দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম