কিশোরীকে চেয়ারম্যানের বিয়ের ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশ
২৭ জুন ২০২১ ২১:৪৬
ঢাকা: পটুয়াখালীর বাউফলে সালিশ বৈঠকে এসে কিশোরীকে পছন্দ হওয়ায় তার সঙ্গে চেয়ারম্যানের বিয়ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন আদালত।
আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি), জেলা নিবন্ধক ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আলাদা আলাদা প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবরে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে ওই কিশোরীকে নিরাপত্তা দিতে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৭ জুন) এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৮ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেছেন।
আদালত শুনানিতে বলেছেন, পত্রিকার প্রতিবেদন দেখে যা বুঝলাম সালিশ করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে ক্ষমতার অপ্যবহার করেছেন ওই চেয়ারম্যান। বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম ও ইকরামুল হক টুটুল।
পরে আইনজীবী আমাতুল করিম ও ইকরামুল হক টুটুল জানান, আদালত কিশোরীকে চেয়ারম্যানের বিয়ের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক চেয়ারম্যানের ক্ষমতার অপব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করবেন, পিবিআই ফৌজদারি অপরাধের বিষয়ে তদন্ত করবেন এবং জেলা নিবন্ধক বিয়ে নিবন্ধনের বিষয়ে তদন্ত করবেন।
বিয়ের একদিন পর ইউপি চেয়ারম্যানকে তালাক দিলো কিশোরী
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের মেয়ের সঙ্গে একই ইউনিয়নের নারায়ণপাশা গ্রামের রমজান নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা দু’জন পালিয়ে যায়। বিষয়টি কিশোরীর বাবা কনকদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান। এরপরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে শুক্রবার কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে ছেলে ও মেয়ের পরিবারকে যেতে বলেন। সেই অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান।
পরে শুক্রবার দুপর ১টায় স্থানীয় কাজী মো. আবু সাদেককে বাড়িতে ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার।
এদিকে এই বিয়ের পর তা জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। পরেরদিন ওই একই কাজীর মাধ্যমেই তালাক সম্পন্ন হয়।
তবে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার জানান, ওই মেয়ে তাকে স্বামী হিসেবে মেনে না নেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে মেয়েটিকে তার বাবার সঙ্গে তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও