Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নামের মিলে কারাগারে মানিক, হাইকোর্টে ৬ মাসের জামিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৮ জুন ২০২১ ১৮:০৪

ঢাকা: শুধু নামের মিল থাকায় মাদক মামলায় মানিক মিয়ার বদলে কারাগারে থাকা শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের মানিক হাওলাদারকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই মামলার নথি (সিডি) হাইকোর্টে দাখিল করতে সিরাজগঞ্জের জেলা জজকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুন) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী পার্থ সারথী রায়। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

এর আগে, গত ৮ মার্চ এক মানিকের বদলে অন্য মানিক জেল খাটছেন, এমন অভিযোগের ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

সে অনুসারে শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামসুল আলম বিচারিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন দেন। আজ (২৮ জুন) আদালতে বিচারিক প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

বিচারিক প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার আসামি মানিক মিয়া ও গত বছরের ২৮ নভেম্বর গ্রেফতার মানিক হাওলাদার একই ব্যক্তি নন। তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি। পরোয়ানাভুক্ত মানিক মূলত শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার মালতকান্দির ইব্রাহিম মৃধার ছেলে।

অপরদিকে গ্রেফতার মানিক হাওলাদার শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার, চর সখিপুরের আলম চান বেপারী কান্দির নজরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় জানান, হাইকোর্ট মানিক হাওলাদারকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন। সিরাজগঞ্জের জেলা জজের কাছে মামলার নথি তলব করেছেন। পাশাপাশি মুল আসামির সাজা পরোয়ানাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শোকজ করেছেন। এ ছাড়া আট সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আইনজীবীরা জানান, ২০০৯ সালে একটি গাড়িতে ৬৬৮ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়। এ ঘটনার সময় গাড়িতে থাকা চার জনকে আসামি করে সিরাজগঞ্চের সলঙ্গা থানায় মামলা করা হয়। পরে ওই মামলার আসামি মো. মানিক মিয়াকে ২০০৯ সালের ৩ জুন গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তিনি প্রায় ছয় মাস কারাভোগের পর একই বছর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে যান।

মামলার দায়েরের দীর্ঘ ১০ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ দায়রা জজ আদালতের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ফাহমিদা কাদের ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে চার আসামিকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন। আসামিরা হলেন ফরিদপুরের আলফা ডাঙ্গার মন্টু শেখ ওরফে জামাল উদ্দিন ও সোহরাব হোসেন। পটুয়াখালী বাওফল থানার মো. জামাল হোসেন ও শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার পলাতক মো. মানিক মিয়া।

কিন্তু গত ১৩ জানুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত মো. মানিক মিয়ার স্থলে শুধু নামের মিল থাকার কারণে মানিক হাওলাদারকে শরীয়তপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে মামলার প্রকৃত আসামি মানিক মিয়ার বাবার নাম ইব্রাহিম মৃধা, মাতা: লুতফা, গ্রাম: মালত কান্দী, ওয়ার্ড: ৬, ডাকঘর ও থানা: সখিপুর, উপজেলা: ভেদরগঞ্জ, জেলা শরীয়তপুর।

মানিক হাওলাদারের ছোট ভাই রতন হাওলাদার জানান, মানিক আমার বড় ভাই। সে গ্রামে মাছ বিক্রি করে সংসার চালাতো। তার চারটি ছেলে মেয়ে। কষ্ট করে সংসার চলতো। কিন্তু আমার বাবার নাম নজরুল ইসলাম আর মায়ের নাম রেজিয়া বেগম। গ্রাম: আলম চাঁন ব্যাপারীকান্দী। ওয়ার্ড নং: ৯। ডাকঘর ও থানা: সখিপুর, উপজেলা: ভেদরগঞ্জ, জেলা: শরীয়তপুর। জন্ম তারিখ ১৯৭৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় নির্দোষ মানিক হাওলাদারের স্ত্রী সালমা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মানিকের মুক্তি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

আজ হাইকোর্ট বিচারিক প্রতিবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে নিরাপরাধ মানিক হাওলাদারকে ছয় মাসের জামিন দেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

কারাগার নামের মিল হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর