১৭ কোটি ভ্যাকসিন আসছে দেশে— জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
৩০ জুন ২০২১ ১৫:২৮
ঢাকা: করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন পেতে যখন গলদঘর্ম হতে হচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ই বড় সুখবর শোনালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ নিকট ভবিষ্যতেই পেতে যাচ্ছে ১৭ কোটি ভ্যাকসিন!
বুধবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্ব সংসদ অধিবেশন চলছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো ধরনের সংকট থাকবে না। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে আসবে ১০ কোটি ভ্যাকসিন। আরও সাত কোটি ভ্যাকসিন আমরা আগামী বছর নাগাদ পেয়ে যাব।
আরও পড়ুন-
মন্ত্রী জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ কোটি ভ্যাকসিন পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। একেকজন দুই ডোজ হিসাব করে দেশের পাঁচ কোটি নাগরিককে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া আগামী বছরের শুরুর প্রান্তিকেই জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে সেগুলোও সবাইকে প্রয়োগ করা হবে। তখন দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে।
আগামী বছরের সাত কোটি ভ্যাকসিন জনসনের হলেও এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাশিত ১০ কোটি ভ্যাকসিনের কোন কোম্পানির কত ডোজ করে আসবে, সে বিষয়ে এখনই সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সরকার প্রথম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ব্র্যান্ডের ভ্যাকসিন কেনার জন্য ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করে। তাদের কাছ থেকে তিন কোটি ভ্যাকসিন কেনা হয়। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ছিল তাদের। তবে এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। ভারতে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হলে সিরামের কাছ থেকে আর ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। এর সঙ্গে ভারত সরকারের দুই দফায় উপহার দেওয়া ৩২ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনও ছিল সরকারের কাছে। এই এক কোটি ২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনের মজুত প্রায় শেষের দিকে।
এর মধ্যে সরকার চীনের কাছ থেকে দুই দফায় সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার পেয়েছে। আর বৈশ্বিক ভ্যাকসিন জোটের উদ্যোগে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজ থেকে দেশে এসেছে ফাইজারের ১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। এসব ভ্যাকসিন এখন সীমিত পরিসরে প্রয়োগ করা হচ্ছে দেশে।
সরকারি সূত্রগুলো বলছে, কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকেই মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ২ বা ৩ জুলাই আসবে দেশে। চীনের কাছ থেকে কেনা সিনোফার্মের ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনও বাংলাদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি বেইজিং নিয়েছে বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
এছাড়া চীন থেকে সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক, রাশিয়া থেকে স্পুটনিক-ভি এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে জনসন অ্যান্ড জনসনের একডোজের ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এখনো পর্যন্ত এর কোনোটিরই দেশে আসার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবরই আশাবাদ জানিয়ে আসছে, খুব শিগগিরই বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর