চট্টগ্রাম ব্যুরো: নোয়াখালীর ভাসানচর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে আশ্রয় নেওয়া নারী ও শিশুসহ সাত রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। এ নিয়ে সন্দ্বীপে ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা মোট ৪৬ জন রোহিঙ্গা আটক হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শনিবার (৩ জুলাই) বিকেলে সন্দ্বীপ উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সাগরদ্বীপ উড়িরচরের দক্ষিণ উড়িরচর গ্রাম থেকে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বশীর আহমেদ খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আটক সাতজনের ২ জন পুরুষ, ২ জন নারী এবং ৩ জন শিশু। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, তারা নৌকায় করে ভাসানচর থেকে সাগরপথে উড়িরচর দ্বীপে আসেন। সকালে তারা সেখানে পৌঁছেন। উড়িরচর থেকে নোয়াখালীর দিকে যাওয়ার ব্যবস্থা করছিলেন তারা। গ্রামবাসী জানতে পেরে তাদের আটকে ফেলেন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তাদের আটক করে থানায় আনা হচ্ছে। মামলা দায়ের হবে।’
এর আগে গত তিন মাসে মীরসরাইয়ে ২৪ জন রোহিঙ্গা আটক হন, যাদের সবাই ভাসানচর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছিলেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বান্দরবানের তমব্রু সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা প্রবেশ শুরু করেন। সেসময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার হয়ে ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। গত তিন দশকে আসা নতুন-পুরনো মিলিয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বসবাস।
কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ দিতে নৌবাহিনী নোয়াখালীর ভাসানচর দ্বীপে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে। সেখানে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, খেলার মাঠ, হাসপাতালসহ প্রায় এক লাখ মানুষের নিরাপদে থাকার সব ব্যবস্থা আছে বলে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।
এ অবস্থায় গত বছরের (২০২০) ৪ ডিসেম্বর থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়া শুরু হয়। কয়েক দফায় ১৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা ভাসানচরে গিয়েছিলেন। তবে এর মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে ভাসানচর থেকে ফের কক্সবাজারে পৌঁছেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।