জুলাইয়ের শেষে আসছে মেট্রোরেলের আরও ২টি কোচ
৪ জুলাই ২০২১ ১৭:১৬
ঢাকা: এ বছরের ডিসেম্বরেই স্বপ্নের মেট্রোরেলকে গণপরিবহনে যুক্ত করার চিন্তা রয়েছে সরকারের। সেই লক্ষ্যে মহামারি করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেও কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে মেট্রোরেলের দুটি কোচ বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে আসা কোচগুলোর ট্রায়াল চলছে। এখন তৃতীয় ও চতুর্থ কোচও ঢাকা পৌঁছানোর অপেক্ষা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাইয়ের শেষ নাগাদ তৃতীয় ও চতুর্থ কোচও চলে আসবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলের তৃতীয় ও চতুর্থ মেট্রোট্রেনের সেট নিয়ে গত ২২ জুন জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে। সেগুলোর মোংলাবন্দরে এসে পৌঁছানোর সম্ভাব্য সময় চলতি জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ। মোংলাবন্দরে পৌঁছানোর পর শুল্ক ও ভ্যাট সম্পর্কিত কার্যাদি শেষে বার্জ যোগে মেট্রোট্রেনের সেট দুটি নদীপথে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকার উত্তরাস্থ ডিএমটিসিএল ডিপোতে এসে পৌঁছবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এবার তৃতীয় এবং চতুর্থ পর্যায়ের ট্রেনসেট একসঙ্গে আসছে। এগুলো আসার পর আগের প্রক্রিয়ায় মেট্রোরেলের উত্তরায় প্রধান ডিপোতে আনলোড করা হবে। এরপর সেগুলো কয়েকদফা পরীক্ষার পর সংযোগ স্থাপন করা হবে। জাপান এবং বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তারা এসব কাজ সম্পন্ন করবেন।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল প্রথম মেট্রো ট্রেন সেট এবং ৩ জুন দ্বিতীয় মেট্রোসেট ঢাকার উত্তরাস্থ ডিএমটিসিএল ডিপোতে এসে পৌঁছে। ২০১৭ সালের আগস্টে কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে মেট্রোরেলের জন্য ২৪ সেট ট্রেন তৈরির চুক্তি সই করে ডিএমটিসিএল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ সেট ট্রেন তৈরি করা হয়। যার মধ্যে দুই সেট ঢাকা পৌঁছেছে। আর দুই সেট যাত্রাপথে। আর পঞ্চম ট্রেন সেটের জাপান থেকে শিপমেন্টের সম্ভাব্য তারিখ ১৬ জুলাই। বাংলাদেশে পৌঁছানোর সম্ভাব্য তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর।
প্রকল্পের ফেসবুক পেইজে আরো উল্লেখ করা হয়, Early Commissioning-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চলমান নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বৈশ্বিক মহামারী পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ এর সার্বিক অগ্রগতি ৬৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। অন্যদিকে ট্রেন চলাচলের জন্য যে বিদ্যুতের দরকার হবে, সে লাইন বসানোর কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রতিটি স্প্যানের ওপরে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর যানজট কমাতে ২০১৩ সালে মেট্রোরেলের পরিকল্পনা করা হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি নামে পরিচিত মেট্রোরেলের লাইন প্রথমে তিনটির পরিকল্পনা করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে পাঁচটি করা হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ কে নির্বাচন করা হয়। যার আনুষ্ঠানিক নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৬ জুন। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২২ হাজার কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম