বিধিনিষেধে যেমন চলছে সচিবালয়
৫ জুলাই ২০২১ ১৬:৪৬
ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এই সময়ে সচিবালয়ে জরুরি সেবা ছাড়া সকল মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যে সকল মন্ত্রণালয়ের বিভাগ/ শাখা খোলা রাখা হয়েছে, তাদের কার্যক্রমও চলছে সীমিত জনবল দিয়ে।
সোমবার (৫ জুলাই) সচিবালয়ে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মন্ত্রণালয়ই ফাঁকা। জরুরি কাজে যুক্ত ছিল কিছু মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের শাখা, এছাড়া সবই ছিল বন্ধ। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেমন উপস্থিতি দেখা যেত, সেটা দেখা যায়নি। প্রায় প্রতিটি দফতরই ছিলো কর্মকর্তা-কর্মচারী শূন্য। কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রবেশ গেট পর্যন্ত বন্ধ ছিল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে বেশিরভাগ শাখা বন্ধ পাওয়া গেছে। প্রতিমন্ত্রীর দফতর খোলা থাকলেও মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের দফতর খোলা ছিল। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বিধিনিষেধে জরুরি প্রয়োজনে সীমিত জনবল রাখা হয়েছে। লোকজন না থাকায় বেশিরভাগ দরজায়ই তালা ঝুলছে।
এদিকে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত মূল কাজের সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা বিভাগের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পুরোটাই খোলা রাখা হয়েছে। শিক্ষা বিভাগের আংশিক খোলা থাকতে দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেবা বিভাগের ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাকে অফিস করতে হচ্ছে। তবে শিক্ষা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারাই কেবল অফিস করছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক দুপুরে অফিস করেছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা থাকলেও তিনি প্রস্তুত না থাকায় তা বাতিল করা হয়।
সোমবার অফিস করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচার ড. হাছান মাহমুদ। অফিসে উপস্থিত ছিলেন তথ্য সচিব মকবুল হোসেন। এসময় তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বিএসআরএফ’র নব নির্বাচিত কমিটি। এসময় মন্ত্রী নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানান।
এছাড়া বিধিনিষেধে খোলা ছিল তথ্য অধিদফতরের সংবাদ কক্ষ। সীমিত জনবল দিয়ে কাজকর্ম চলছে সেখানে। তবে অন্যান্য শাখা বন্ধ রয়েছে। খোলা রয়েছে সচিবালয় ক্লিনিকও। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা রয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুমে কাজ করছেন অল্প কিছু কর্মকর্তা।
যারা অফিস করেছেন, তারা বলছেন, ঘরের বাইরে যাওয়ায় ঝুঁকি তো রয়েছেই। কিন্তু জরুরি কাজ করতে হবে বলেই বেরিয়েছেন।
তবে বন্ধ থাকা মন্ত্রণালয়গুলোতে গিয়ে এক ধরনের ভুতুরে পরিস্থিতিই পাওয়া গেছে। লাইট বন্ধ, কলাপসিবল গেটে ছিল তালা। খাদ্য, কৃষি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, শিক্ষা, সমাজকল্যাণ, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, যুব ও ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, নৌ পরিবহন, বাণিজ্য, নারী ও শিশু, পাট, শ্রম মন্ত্রণালয়গুলো ঘুরে এমন পরিবেশ পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনও তেমন দেখতে পাওয়া যায়নি। যারা ডিউটি করছেন, লোকজন না থাকায় তারা অনেকটা আরাম আয়েশে গল্পেই কাটিয়েছেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ চলমান। এ সময়ে দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন, দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতির ধারাবাহিকতায় আরও সাত দিন অর্থাৎ ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ